1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখো মানুষ - RT BD NEWS
রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ০৫:১৪ অপরাহ্ন

মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখো মানুষ

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে

নানামুখী সংকটের মধ্যে বহু বছর ধরে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চলছে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার উন্নতি করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে আধুনিক ভবন। কিন্তু হাসপাতালে সার্বক্ষনিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালে গিয়ে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটিতে ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসারগন ২৪ ঘন্টা হাসপাতে ভর্তি থাকা রোগী এবং ইমার্জেন্সীতে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে আছেন। সরকারি খোলার দিন দুপুর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে বহি: বিভাগ। শুক্রবার সারাদিন বন্ধ থাবে বহি: বিভাগ। বহি: বিভাগ বন্ধ থাকায় মানুষ জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে বাধ্য হন। কিন্তু সেখানে গেলে গুরুত্বর অসুস্থ্য রোগীদেরকে দায়িত্বরত চিকিৎস ঢাকায় রেফার করে দেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা। তাদের আরোও অভিযোগ,নরমালি অসুস্থ্য রোগীদের দেন নামমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা। যার কারণে বহু রোগী এবং তাদের স্বজনরা ছুটে যান বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার। সেখানে অধিক টাকা ভিজিট,প্যাথলজি বাণিজ্যের খপ্পরে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, শুক্রবার ব্যতীয় সাপ্তাহে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত মানুষ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ পান। করতে পারেন প্রয়োজনীয় সকল পরক্ষিা-নিরিক্ষা। কিন্তু দুপুর ২ টার পর থেকে পর দিন সকাল ৯টা অর্থাৎ ১৮ ঘন্টা হাসপাতালে নিয়মিত কোন ডাক্তার থাকে না। ওই সময়টাতে পুরো জেলার মানুষের চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে থাকেন একজন মেডিকেল অফিসার। আধুনিক এই হাসপাতালটিতে ২৪ ঘন্টা রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। হাসপাতালটিতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টাই থাকে না বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক। রোগীদের বহু বছরের দাবি, ২৪ ঘন্টা হাসপাতালটিতে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ, গাইনী, মেডিমিন কনসালটেন্ট, একজন কার্ড স্পেশালিষ্ট এবং একজন সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকা জরুরি। কিন্তু সেই ব্যবস্থাটি আজোও করা হয়নি। যার কারণে এখনও মানুষ শতভাগ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই মানুষ ঢাকা এবং নারায়নগঞ্জ ছুটে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে আসলেই রোগীকে ঢাকায় রেফার করেন চিকিৎসকরা। অসুস্থ্য অধিকাংশ রোগীকেই ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়ে দায় সারেন চিকিৎসকরা। রোগীদেরকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার সুযোগ থাকলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়েই গুরুত্বর আহত রোগীদের ছুটতে হচ্ছে ঢাকায়। এতে করে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা শাররিক, মানসিক এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারি এই হাসপাতালে ২৪ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা সব ধরণের চিকিৎসক না থাকায় মানুষ বছরের পর বছর কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, সরকারি বন্ধের দিন শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত সব ধরণের চিকিৎসকরা বহি: বিভাগে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেন। হাসপাতাল থেকে রোগীদের ঔষধ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় সকল পরীক্ষা- নিরিক্ষা হাসপাতালেই করাতে পারেন রোগীরা। হাসপাতালটিতে খোলার দিন বহি: বিভাগে আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী এসে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। জেলা সদরে অবিস্থিত এই হাসপাতালটির উপর নির্ভরশীল জেলা সদরের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ।

সরেজমিনে হাসপাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহি: বিভাগে শত শত রোগীরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রুমে লাইনে দাড়িয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। প্রয়াজনীয় পরীক্ষা- নিরিক্ষাও হাসপাতালে করছেন রোগীরা। নিচ্ছেন বিনামূল্যের ঔষধও। হাসপাতালটিতে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছাড়া সব ধরণের চিকিৎসকদের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে দেখা গেছে। অপরদিকে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করে দেখা গেছে, ইমার্জেন্সীতে আসা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন একজন মেডিকেল অফিসার। সড়ক দুর্ঘটনা, হার্ট অ্যাটাক সহ অন্যান্য গুরুত্বর আহত বা অসুন্থ্য রোগীকে দ্রুত ঢাকায় রেফার করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীর স্বজনরা হাতে ফাইল নিয়ে আসছেন। চিকিৎসক তাদেরকে নরমালি প্রেসক্রাইভ দিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন আগামীকাল সকালে বড় ডাক্তার আসবে। তখন তো সকালে রাউন্ডে গিয়ে তারা দেখবেন। আপাতত এই চিকিৎসা চলবে। যদি রোগীকে ঢাকা নিতে চান তাহলে স্বাক্ষর করে রেফার করে দিবো। এসময় ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন তাছলিমা বেগম জানান, মাথাব্যাথা , বমি আর পেটব্যাথা কোনোভাবে কমছে না আমার মেয়ের। আজ শুক্রবার ডাক্তার নেই । ইমার্জেন্সীতে গেলাম চিকিৎসক বলেন কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। আর সেটা না করলে রেফার করে ঢাকা যেতে বলেন। আরেক ভুক্তভোগী সোলেমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বৃদ্ধ মাকে ভর্তি করিয়েছি। ভালো কোনো চিকিৎসক দেখাতে পারিনি। মায়ের অবস্থার বেগতিক দেখে ইমার্জেন্সীতে আসলাম। চিকিৎসক মাকে ঢাকা রেফার করেছে। এখানে যদি চিকিৎসা নাই থাকে তাহলে ভর্তি করলো কেন। ২৪ ঘন্টা রোগীদের সেবায় চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা না করলে আমার মতো সকলেই ভর্তি আর রেফার পর্যন্ত সেবাটাই পাবে।

ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন রাজিব হাসান বলেন, জরুরি বিভাগে আসলে জরুরি যে সেটা পাওয়ার কথা সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে আসালে রোগীদের কখনও ঢাকায় রেফার করবে, সেই চিন্তায় ব্যস্ত থাকেন মেডিকেল অফিসার। ওনারা কোনোমতে চিকিসাসেবা দিয়ে রোগী বিদায় করে দেন। এই হাসপাতালে যদি ২৪ ঘন্টা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যেমন কার্ডিওলজি,সার্জারী এবং একজন মেডিসিন কনসালটেন্ট সহ কমপক্ষে ৪ জন চিকিৎসক দায়িত্বে থাকতো তাহলে মানুষ কাঙ্খিত সেবা পেতো। রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদানে হাসপাতালে অন্তত বিশেষজ্ঞ ৪ জন চিকিৎসককে ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করলে মানুষ কাঙ্খিত সেবা পাবে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্তাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা: মো: হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি বর্তমান অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। এখানে যারা দায়িত্বে ছিলো তারা পোষ্টিং হয়ে চলে গেছে। তারা এই বিষয়টা কতটুকু কি করেছে সেইটা আমার জানা নেই। তবে আমি এখন চেষ্টা করবো যাতে ইমার্জেন্সীতে এবং ওয়ার্ডে ভালো ভালো চিকিৎসকরা যেনো রাউন্ড দেয় বা অনকল এসে গুরুতর অসুস্থ্য রোগীর সেবা প্রদান করেন।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট