গুরুদাসপুরে সম্প্রতি ১৩টি ইটভাটার মধ্যে ১১টি ভাটায় লাইসেন্স ছাড়াই ইট পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এসব ভাটার সবগুলোই আবাসিক এলাকা ও কৃষি জমিতে অবস্থিত। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে এ পর্যন্ত ২৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, তবে অভিযানের পরও এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দিনভর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তারের নেতৃত্বে একটি ভ্রমমাণ আদালত ৯টি ভাটায় অভিযান চালায়। তবে কোন ভাটাতেই লাইসেন্স বা পরিবেশের ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, প্রতি বছরেই এসব অবৈধ ভাটায় জরিমানা করা হলেও সেগুলো বন্ধ হয় না, ফলে কৃষি জমি ধ্বংস এবং পরিবেশের ক্ষতি বাড়ছে।
এ ঘটনায় গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া মৌজাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমিতে অবস্থিত ১৩টি ইটভাটার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ৭টি ভাটা গুরুদাসপুর পৌর শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত, যার মধ্যে মেসার্স এমজেডবি ব্রিকস, মেসার্স এসএআর ব্রিকস, মেসার্স এএমবি, মেসার্স এমডিবি, মেসার্স এমবিপি ব্রিকস এবং মেসার্স একেবি ব্রিকস অন্যতম। এছাড়া মশিন্দা ইউনিয়নের শিকারপুর মৌজায় ৪টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।
পরিবেশ অফিসের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, গুরুদাসপুরে কিছু ভাটার জন্য কৃষি অফিস থেকে এক ফসলি জমির প্রত্যায়ন পাওয়ার পর পরিবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, তবে বেশিরভাগ ভাটা অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ অনুযায়ী, আবাসিক, কৃষি জমি, বনভূমি, জলাভূমি এবং অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া কোনো স্থানেই ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু গুরুদাসপুরের এসব ভাটাগুলো সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে কৃষি জমিতে নিয়মিত ইট প্রস্তুত করছে।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোশারফ হাজি দাবি করেছেন, পরিবেশের ছাড়পত্র না দেওয়ায় তারা লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছেন না। তবে তারা ব্লক ইট তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার জানান, খুব শিগগিরই এসব অবৈধ ইটভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, এসব ভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে, কিন্তু দীর্ঘদিনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।