ইতালির নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার ফলে বিদেশে বসবাসকারী ভাষা বা সংস্কৃতি না জানা ইতালীয়দের বংশধররা আর সহজে নাগরিকত্ব পাবেন না। ইতোমধ্যে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। এখন এটি উচ্চকক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এর আগে 'ইয়ুস সাঙ্গুইনিস' বা রক্তের অধিকারের ভিত্তিতে বিদেশে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা, যাদের পূর্বপুরুষ ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেছেন, তারা সহজেই নাগরিকত্ব পেতে পারতেন। এই সুবিধা ১৯৯২ সাল থেকে চালু ছিল। কিন্তু নতুন আইনে সেই সুযোগ সীমিত করা হয়েছে।
নতুন আইনে কী থাকছে?
নাগরিকত্ব পেতে হলে বাবা-মা বা দাদা-দাদির কেউ একজন ইতালিতে জন্মগ্রহণ করতে হবে।
আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার বাধ্যতামূলক, এবং তা সরাসরি ইতালিতে গিয়ে দিতে হবে।
নাগরিকত্ব আবেদন আর স্থানীয় কনস্যুলেটে নয়, বরং কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে জমা দিতে হবে।
দ্বৈত নাগরিকত্বধারীরা যদি ট্যাক্স, ভোট বা পাসপোর্ট রিনিউ না করেন, তবে তারা নাগরিকত্ব হারাতে পারেন।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনিও তাজানি জানান, “আগের নিয়মে এমন অনেক মানুষ নাগরিকত্ব পেয়েছে, যাদের বাস্তবিকভাবে ইতালির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তারা শুধু ভ্রমণ সুবিধার জন্য পাসপোর্ট নিয়েছে।”
নতুন আইনের ফলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইতালীয় নাগরিকদের সন্তানরা আর আগের মতো সহজে নাগরিকত্বের সুবিধা পাবে না। বিশেষ করে যেসব পরিবার ইতালির বাইরে বসবাস করে, তাদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়া এখন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
তবে ইতিমধ্যে যারা ২৭ মার্চ ২০২৫ মধ্যরাতের আগে আবেদন করেছেন, তারা পুরাতন আইনের আওতায়ই বিবেচিত হবেন।
দেশটির অনেক আইনপ্রণেতা ও সাধারণ নাগরিক নতুন আইনের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা ও বাস্তব সংযোগ থাকা উচিত, তবে সম্পূর্ণভাবে বংশগত সুবিধা কেড়ে নেওয়া উচিত নয়।
এক নাগরিক বলেন, “নাগরিকত্ব পেলে যেন তারা ইতালিতে বসবাস করে এবং দেশের উন্নয়নে অংশ নেয়। শুধু সুবিধার জন্য নয়।”