ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দূর্বৃত্তরা ১০ কাঠা জমির ধরন্ত লাউ গাছ কেটে দিয়ে বিশাল ক্ষতি করেছে। এই নৃশংস ঘটনা ঘটে গত শুক্রবার ভোরে কালীগঞ্জ পৌরসভার বাকুলিয়া গ্রামের মাঠে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নজির আহম্মেদ তার পরিশ্রম এবং বড় অঙ্কের বিনিয়োগের মাধ্যমে জমিতে লাউ চাষ করেছিলেন। এখন তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রশ্ন তুলছেন, কীভাবে সংসার চালাবেন।
ক্ষতিগ্রস্ত নজির আহম্মেদ, কালীগঞ্জ পৌরসভার বাকুলিয়া গ্রামের মৃত তছের আলীর ছেলে। তিনি জানান, ১০ কাঠা জমিতে লাউ চাষে প্রায় ৫০ হাজার টাকার অধিক বিনিয়োগ করেছেন। জমিতে লাউ ধরতে শুরু হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় ১২ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এখন প্রতি দুই দিন পরপর ১২০ থেকে ১৩০টি লাউ তুলতে পারতেন, যা প্রতিটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতেন। কিন্তু শুক্রবার ভোরে ক্ষেত পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখেন, সব লাউ গাছ গোড়া থেকে কেটে ফেলা হয়েছে।
নজির আহম্মেদ বলেন, "আমি জীবনে কারও সঙ্গে কোনো ঝগড়া-বিবাদ করিনি। আমি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও জড়িত নই। তবে কারা এই কাজ করল, তা আমি বুঝতে পারছি না।" কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রতিবেশী মহিদুল ইসলাম বলেন, "নজির আহম্মেদ অত্যন্ত নিরীহ ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ। তার মতো নির্লোভ ও ভালো মানুষ এই এলাকায় খুব কমই আছে। কারা এমন জঘন্য কাজ করল, তা আমরা কিছুতেই বুঝতে পারছি না। গাছগুলোতে অসংখ্য লাউ ঝুলছিল। এমন কাজ পশুবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই না।"
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, "লাউ ক্ষেত ধ্বংসের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমন অমানবিক এবং নির্মম কাজ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।"
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নজির আহম্মেদ স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একই সঙ্গে তিনি সরকারের কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
একজন নিরীহ কৃষকের ক্ষেত নষ্ট করার ঘটনা শুধু তার ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি মানবিকতার প্রতি আঘাত। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং দোষীদের শাস্তি এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।