মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসের শুরুতেই যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় সব ধরনের ত্রাণ ও পণ্যের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। দখলদার ইসরায়েল ১৯ জানুয়ারি থেকে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিলেও প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে শনিবার (২ মার্চ)। এরপরই ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি, যদি হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত না হয়, তবে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে।
অন্যদিকে, হামাস অভিযোগ করেছে যে, গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া নির্যাতনের এক সহজ উপায় এবং এটি যুদ্ধাপরাধ ও যুদ্ধবিরতির চুক্তির চরম লঙ্ঘন। তারা আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে গাজার অবরোধ শিথিল করা ও ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের শর্ত থাকতে হবে, নইলে তারা প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াবে না।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অনড় অবস্থানের কারণে দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি। হামাস বলছে, তারা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হবে এমন নিশ্চয়তা ছাড়া প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াবে না।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার উৎসব উপলক্ষে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবকে তারা সমর্থন করে। তাদের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব এসেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আরও জানায়, নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাসকে প্রথমে অর্ধেক ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং বাকিদের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর মুক্তি দিতে হবে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ জরুরি, নইলে মানবিক সংকট আরও তীব্র হবে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে হামাস জানায়, গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হবে এমন নিশ্চয়তা ছাড়া তারা প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি নয়।
গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ হওয়ায় যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের লাখো মানুষের মানবিক সংকট আরও তীব্র হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।