রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। স্টেশনে এসে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। জরুরি প্রয়োজন এবং নির্ধারিত গন্তব্যে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা টিকিট কেটেও ট্রেন চলাচল না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।
কক্সবাজারে পারিবারিক কাজে যাওয়ার জন্য কক্সবাজার এক্সপ্রেসের টিকিট কাটা জিয়াউল হোসেন বলেন, রেল থেকে কোনো পূর্ব ঘোষণা না দেওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েছেন। স্টেশনে এসে ট্রেন চলাচল বন্ধের খবর পান। তিনি বলেন, "যাত্রীরা দূরদূরান্ত থেকে এসেছে। আগে জানানো হলে এত কষ্ট করে আসতে হতো না।" একইভাবে লাকসামে যাওয়ার জন্য স্টেশনে আসা কলেজ শিক্ষার্থী মো. শাহাদাত হোসেনও বাসে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
ঢাকায় ফিরতে চাওয়া ব্যবসায়ী মো. আলমগীর এবং বরিশালে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া মো. সোহেলসহ অনেক যাত্রী ট্রেনের পরিবর্তে বাসে যাওয়ার চিন্তা করছেন। তবে বাসের বাড়তি ভাড়ার বিষয়টি অনেকের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে।
রানিং স্টাফদের দাবি, ১৬০ বছরের পুরোনো মাইলেজ সুবিধা ও আনুতোষিক ব্যবস্থার পুনর্বহাল। অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর থেকে এই সুবিধা সীমিত করে। এ কারণে ২০২২ সালেও রানিং স্টাফরা ধর্মঘট করেছিলেন। এবারও দাবি মানা না হওয়ায় তাঁরা মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। রানিং স্টাফ বলতে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড এবং টিকিট পরিদর্শকদের বোঝানো হয়।
বাংলাদেশ রানিং স্টাফ ও কর্মচারী ইউনিয়নের চট্টগ্রাম সম্পাদক গোলাম শাহরিয়ার জানান, "১৬০ বছর ধরে আইন মেনে মাইলেজ সুবিধা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সরকার আইন না মেনে তা সীমিত করেছে। দাবি পূরণ না হলে কর্মসূচি চলবে।"
কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস, কক্সবাজারগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন এবং সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের অনলাইন টিকিটের টাকা অনলাইনে এবং কাউন্টার থেকে কেনা টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
স্টেশনে রেল ব্যবস্থাপক ও স্টেশনমাস্টারসহ কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে না দেখতে পাওয়ায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মাইকে ঘোষণার মাধ্যমে জানানো হয়, রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রানিং স্টাফদের ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন রানিং স্টাফরা। এর ফলে যাত্রীদের বিকল্প যানবাহন ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা সময় ও অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।