সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, “আমি জয় বাংলা বাহিনীর প্রধান ছিলাম। আমার সাথে আরও অনেকে ছিল। জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন।”
তিনি এই মন্তব্য করেন সিরাজুল আলম খানের (দাদা ভাই) ৮৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিরাজুল আলম খান গবেষণা কেন্দ্র।
আ স ম আবদুর রব বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন, তারা ‘জয় বাংলা’ বলে মৃত্যুবরণ করেছেন। বিজয় লাভের পরও দুই শব্দের এই স্লোগান দিয়েই বিজয় উদযাপন করা হয়েছে। ‘জয় বাংলা’ মানে বাংলার জয়, বাঙালির জয়।”
তিনি আরও বলেন, “বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কবিকে আমি এবং আব্দুল কুদ্দুস মাখন বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাই। বিদ্রোহী কবিও লিখেছিলেন—‘বাংলার জয়, বাঙালির জয়।’
বর্তমানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আ স ম রব বলেন, “এটা নিয়ে কোর্টে মামলা আছে। আমি এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করব না।”
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সিরাজুল আলম খান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অসাধারণ চরিত্র। তিনি ছাত্রলীগের অন্যতম সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন গোপন সংগঠন ‘নিউক্লিয়াস’-এর প্রতিষ্ঠাতা।
আলোচনায় আরও অংশ নেন— জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধান, জেএসডির স্থায়ী কমিটির সদস্য অহী আলম রনজু, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক ছাত্রনেতা আবু বকর সিদ্দিক। বক্তারা বলেন, ‘জয় বাংলা’ কোনো নির্দিষ্ট দলের স্লোগান নয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল প্রতীক।
সম্প্রতি আদালতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে একটি নির্দেশনা চাওয়া হয়। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন, জয় বাংলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। আবার কেউ কেউ একে নির্দিষ্ট দলের স্লোগান হিসেবে দাবি করছেন।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে জয় বাংলা স্লোগানের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি কেবল স্লোগান নয়, এটি আমাদের অস্তিত্বের প্রতীক। তাই এ নিয়ে কোনো বিভাজন চলবে না।”
বক্তারা আরও বলেন, সিরাজুল আলম খান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেপথ্যের কারিগর। স্বাধীনতার পর তাঁর রাজনৈতিক ত্যাগ এবং সংগঠক হিসেবে ভূমিকা অনস্বীকার্য।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, “দাদা ভাই (সিরাজুল আলম খান) ছিলেন গণআন্দোলনের অন্যতম নেতা। স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার পেছনে তাঁর যে ত্যাগ রয়েছে, তা আমরা কখনও ভুলব না।”