জামালপুরের বকশীগঞ্জের উপজেলার লাউচাপড়া ও পাথরেরচর, সানন্দবাড়ি, রৌমারী, কর্তিভারী এ ছাড়াও শেরপুর জেলার জিনাইগাতি নকলা সীমান্ত এলাকার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে অবাধে ভারতীয় জিরা, চিনি, কম্বল-শাড়ি কাপড়, গরুসহ আসছে নানা ধরনের মাদক চোরাই পণ্য। বিপাকে পড়ছে সাধারণ ব্যাবসায়ীরা।
জানা যায়, সীমান্ত ঘেঁষা মেঘালয়ের গারো পাহাড় অঞ্চলের সোমনাথপাড়া, দীঘলকোনা ও বাবলাকোনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে রাতের আধারে ভারতীয় গরু, মাদক দ্রব্যেসহ নানা ধরনের চোরাই পন্য পাচার হয়ে আসছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা এবং ভারতীয় বন্য হাতি আতঙ্কের অজুহাতে এ অঞ্চলে বিজিবির নিয়মিত টহল না থাকায় গ্রাম ৩টি বিভিন্ন ধরনের চোরাই পন্য পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এ গ্রাম গুলোকে বলা হচ্ছে চোরাকারবারি গ্রাম। ওপাড় থেকে আসা কালোবাজারি পন্যগুলো এ এলাকার সাধারণ মানুষের বাড়িতে বাড়িতে রেখে দেয়া হয়। পরে সেখান থেকে হাত বদল হয়ে জামালপুর-শেরপুর জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করা হয়। চোরাই গরু; জিরা, চিনি, কসমেটিকস, সাড়ি-কম্বল ভটভটি, ট্রাক, ছোট পিকআপ ভর্তি হয়ে শেরপুরের শ্রীর্বদ্দীর নকলা, কর্নঝোড়া বাজার তারপর বকসীগঞ্জ-জামালপুর ও বকসীগঞ্জ -শ্রীর্বদ্দী- শেরপুর সড়ক হয়ে শেরপুর জামালপুর ব্রীজ ও মেলান্দহের ডেফলা ব্রীজ দিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্নস্থানে। দুই জেলার মহাসড়ক দুটি নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা।
এসব চোরাকারবারি চক্রের মুলহুতা রুহুল, করিম, বারেক, মঞ্জিল, রফিক, আরমান, নয়ন, মিনাল, আতিক, কাশেম, হারুন, করিমসহ অনেকেই।
স্থানীয়রা জানান, জামালপুর -শেরপুর ব্রীজ ও মেলান্দহের ডেফলা ব্রীজ দিয়ে দিন-রাত ২৪ ঘন্টাই অবাদে পাচার হচ্ছে গরু, জিরা, চিনি, কসমেটিকস, সাড়ি-কম্বল মাদকসহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রী। এসব পন্য সামগ্রী ভটভটি, ট্রাক, ছোট পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রো ভর্তি হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যাচ্ছে। মনে হয় এসব দেখার যেন কেউ নেই। তবে বিকাল থেকে শুরু করে পরদিন সকাল পর্যন্ত সময় গুলো চোরাকারবারিরা বেশি নিরাপদ মনে করে বলে অনেকে ধারনা করেন।
এছাড়াও জামালপুর শেরপুর জেলার সরকারি কালোবাজারী চাউল সিন্ডিকেটের মুলহুতা শেরপুর জেলার নবীনগর ওয়াজ করনী রাইচ মিলের মালিক সুমন মিয়া আওয়ামী লীগের দোসর। তার নামে নাসকতার মামলা থাকলেও অদৃশ্য কারনে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। জামালপুর জেলার সকল সরকারি চাউলও এই দুটি রোড দিয়ে ট্রাক যোগে অবাধে আনানেওয়া করছে।
মানবাধিকার কর্মি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, চোরাচালানের নিরাপদ রোড হিসেবে জামালপুর শেরপুর ব্রীজ ও মেলান্দহের ডেফলা ব্রীজ চোরাচালান কারবারিরা দীর্ঘদিন যাবত নিরাপদ রোড হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে। প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা যাতে গ্রহন করেন।
জামালপুর পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে জিরা, চিনিসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক জব্দও করেছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়তই টহল দেয়া হচ্ছে। তারপরও চোরাকারবারিরা পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে চোরাই কলোবাজারী মালামাল পাচার করে থাকলে জামালপুর-শেরপুর ব্রীজ ও মেলান্দহের ডেফলা ব্রীজে আগামীকাল থেকে দুটি চেকপোস্ট বসানো হবে। যাতে করে চোরাচালানীরা নিরাপদে কাজ না করতে পারে।