ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, যুদ্ধ শেষে ইসরায়েল গাজার নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেবে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ ট্রাম্প বলেন, "যুদ্ধের সমাপ্তিতে ইসরায়েল গাজা ভূখণ্ড আমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) কাছে দিয়ে দেবে। ততক্ষণে ফিলিস্তিনিরা আরও সুন্দর ও আধুনিক নতুন এলাকায় পুনর্বাসিত হবে।"
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
প্রথম ঘোষণা: গত মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, "গাজা পুরোপুরি খালি করা হবে।"
দ্বিতীয় ঘোষণা: চলতি সপ্তাহে তিনি জানান, "গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র।"
সর্বশেষ ঘোষণা: এবার সরাসরি বলেন, "ইসরায়েল গাজা যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়ে দেবে।"
ট্রাম্প দাবি করেছেন, গাজা দখল নিতে কোনো মার্কিন সেনার প্রয়োজন হবে না। এটি ইসরায়েল স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন সফরে থাকাকালীন ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরোক্ষভাবে ট্রাম্পের পরিকল্পনার সমর্থন করেছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, "আমি বুঝতে পারছি না, এতে সমস্যা কোথায়? ফিলিস্তিনিরা গাজা থেকে সরে যেতে পারে, আবার ফিরেও আসতে পারে। কিন্তু গাজাকে পুনর্নির্মাণ করতেই হবে।"
গত ১৫ মাস ধরে চলা ভয়াবহ যুদ্ধের পর ১৯ জানুয়ারি হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়ে নিজেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, "এই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে আমার আত্মবিশ্বাস নেই।"
ট্রাম্পের এই ঘোষণায় মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে এটি হবে ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত পদক্ষেপ। গাজায় মার্কিন নিয়ন্ত্রণ মানে ইসরায়েলের ভূমিকার পরিবর্তন এবং নতুন সামরিক-রাজনৈতিক সমীকরণ। বিশ্ব সম্প্রদায় ট্রাম্পের ঘোষণার পর কী প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।