যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) পরিচালিত ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে— মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন দাবি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এই বিবৃতির কারণে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে এমন একটি সংস্থা, যার নাম আগে কেউ শোনেনি এবং যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি মেরিল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, এই অর্থ বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিসর শক্তিশালী করতে এবং ‘একজন কট্টর বাম কমিউনিস্টকে ভোট দিতে সহায়তা করতে’ দেওয়া হয়েছে।
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ মার্চ এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পটি ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে এবং এটি নিয়ে ট্রাম্পের দেওয়া তথ্য বিভ্রান্তিকর।
বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ট্রাম্পের বক্তব্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নয়, বরং এটি একটি সাধারণ মন্তব্য। তিনি জানান, তদন্ত করে দেখা গেছে যে প্রকল্পের অর্থ মার্কিন একটি সংস্থার মাধ্যমে বৈধ উপায়ে বাংলাদেশে এসেছে এবং এটি কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন সংস্থাকে দেওয়া হয়নি।
ভারতের ক্ষেত্রে উসকানিমূলক বক্তব্যের পর দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে কেন তলব করা হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ট্রাম্পের বক্তব্য উসকানিমূলক নয় এবং এতে তলবের প্রয়োজন নেই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ট্রাম্পের দাবিকে ‘অসত্য’ বলা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, যেহেতু অনুসন্ধানে এ ধরনের কোনো প্রকল্প বা দুই ব্যক্তির সংস্থা পাওয়া যায়নি, তাই ‘অসত্য’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা কবে স্বাভাবিক হবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন জানান, ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া ভারতের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ আশা করছে, ভারত শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানাবে বা কার্যক্রম বাড়াবে, যাতে বাংলাদেশি নাগরিকরা সহজে ভিসা পান।