যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পানামা খাল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পানামা খাল আবার দখলে নিতে পারে। এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
শনিবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ একাধিক পোস্টে তিনি বলেন, “পানামা যদি এই গুরুত্বপূর্ণ জলপথটি গ্রহণযোগ্যভাবে ব্যবস্থাপনা করতে না পারে, তাহলে খালটি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাব।”
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, পানামা খাল ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রকে অতিরিক্ত মাশুল দিতে হচ্ছে, যা অগ্রহণযোগ্য। তিনি আরও দাবি করেন, খালটি যেন ‘ভুল হাতে’ না পড়ে। এর মাধ্যমে তিনি চীনের প্রভাবের বিষয়ে ইঙ্গিত দেন।
এক পোস্টে তিনি সতর্ক করেন, “চীনের পানামা খাল ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের প্রভাব থাকা উচিত নয়। আমি এ বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করে আসছি।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিতে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পানামা যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিত্র দেশ হওয়া সত্ত্বেও, ট্রাম্প তার বক্তব্যে সরাসরি তাদের নীতিমালা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়েও মিত্র দেশগুলোকে চাপে রাখতে এবং হুমকি দিতে দ্বিধা করেননি। পানামা খাল নিয়ে তার এই মন্তব্য সেই নীতিরই ধারাবাহিকতা।
ট্রাম্প পানামার চার্জ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পানামা যে চার্জ করছে, তা হাস্যকর। যুক্তরাষ্ট্র উদারতার সঙ্গে পানামাকে সহায়তা করেছে। এই সহযোগিতা অন্যদের সুবিধার জন্য নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বের নিদর্শন।”
পানামা খাল আটলান্টিক ও প্যাসিফিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগকারী একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। এটি বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালে পানামা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে খালের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর থেকে খাল ব্যবস্থাপনায় তাদের ভূমিকা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। পানামা সরকার এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই বার্তা ল্যাটিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পানামা খাল নিয়ে মন্তব্য তার আগ্রাসী কূটনীতির আরেকটি উদাহরণ। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয় এবং পানামা সরকারের অবস্থান কী, সেটিই এখন দেখার বিষয়।