ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন এবং শিক্ষা ও গবেষণায় অগ্রগতির বিষয়ে আন্তরিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান, মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা প্রদান, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন এবং গবেষণা উন্নয়নে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক উন্নয়ন কার্যক্রম, শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক পদক্ষেপ এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত কয়েকটি নতুন আবাসিক হল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের সব অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বৃত্তির আওতায় আনতে আমরা একটি ‘বিশেষ এন্ডাওমেন্ট ফান্ড’ গঠনের পরিকল্পনা করেছি। এটি বাস্তবায়িত হলে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হতে পারবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবা আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন উপাচার্য। তিনি জানান, “শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা উন্নত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রকে আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাশাপাশি, শিক্ষকদের সঙ্গেও শিক্ষার্থীদের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়ন জরুরি। আমরা এ বিষয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।”
সাক্ষাৎ শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই বিশ্ববিদ্যালয় অতীতে যেমন ভূমিকা রেখেছে, আগামীতেও তা বজায় রাখবে বলে আশা করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।”
প্রধান উপদেষ্টার এই আশ্বাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সন্তোষ প্রকাশ করেছে। শিক্ষা ও গবেষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদানকে আরও সুসংহত করতে প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান ভাষা আন্দোলন, ২৪-এর ছাত্র আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই দেশের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।