মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে চারটি পৃথক দুর্ঘটনায় ১০টি যানবাহনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘন কুয়াশার কারণে পথ পরিষ্কার দেখা না যাওয়ায় এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে।
নিহত ব্যক্তি মো. ফরহাদ হোসেন (৪০), ফরিদপুরের ভাঙা এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় বাসচালক ছিলেন। আহতদের মধ্যে জাকির হোসেন (৩২), নোয়াখালীর বাসিন্দা ও বাসচালকের সহকারী, গুরুতর রক্তক্ষরণে ভুগছেন। শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজিয়া মাহবুব জানান, আহত অবস্থায় ফরহাদ ও জাকিরকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ফরহাদ কোমরের ব্যথায় কাতর ছিলেন এবং এক্স-রে করার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান। বর্তমানে তাঁর মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোর থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কম ছিল। মাওয়ামুখী লেনে ষোলঘর থেকে হাসাড়া পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনগুলো একটির পেছনে আরেকটি ধাক্কা দেয়। এতে বড় বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান ও কাভার্ডভ্যানসহ ১০টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ জানান, এই এলাকায় ৪টি পৃথক স্থানে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সাকুরা পরিবহনসহ অন্যান্য বড় যাত্রীবাহী বাস এবং মালবাহী গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু গাড়ি সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং কিছু গাড়ি অন্য গাড়ির পেছনে ধাক্কা দেয়।
দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ শুরু করে। সকাল ১০টা পর্যন্ত মাওয়া টোল প্লাজা থেকে ষোলঘর পর্যন্ত প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠায়।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, ভোর থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশার কারণে সামনের পথ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। দৃশ্যমানতা কম থাকায় চালকরা তাদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন, যার ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সড়ক প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ চালকদের প্রতি সাবধানে গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার সময় এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারে গাড়ির হেডলাইট চালু রাখার পাশাপাশি গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।