তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক তিনটি রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রোববার (১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগ এ দিন ধার্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে, বিএনপির পক্ষে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে তিনটি পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
২৩ অক্টোবর: জামায়াতে ইসলামী এ বিষয়ে রিভিউ আবেদন করে।
১৬ অক্টোবর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রিভিউ আবেদন করেন।
আগস্ট: ড. বদিউল আলম মজুমদার তার আবেদন জমা দেন।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মতামত দেন।
রায়ে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের আইনি লড়াইয়ে আটজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করা হয়। এদের মধ্যে ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম এবং ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দেন।
অন্যদিকে, ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক এবং ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে মত দেন।
১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী গৃহীত হয়, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করে। তবে এ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে ২০০৫ সালে হাইকোর্টে মামলা করা হয়।
এবারের রিভিউ আবেদনের শুনানি এবং আদালতের রায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।