দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পর এবার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— কে হবেন রাজধানীর পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? বিজেপির দাপুটে জয়ের পর একাধিক সম্ভাব্য মুখ উঠে এসেছে আলোচনায়। তবে কিছু মিডিয়া রিপোর্ট দাবি করছে, বিজেপি রাজনৈতিকভাবে চমক দিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদে নতুন কাউকে বসাতে পারে।
বিজেপির অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বারবার নাম উঠে আসছে পরবেশ ভার্মার। দিল্লি নির্বাচনে আপের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে পরাজিত করেছেন তিনি। তার বাবা এক সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তাই অভিজ্ঞতা ও পারিবারিক রাজনৈতিক প্রভাব তাকে এগিয়ে রাখছে।
দিল্লির বিজেপি প্রধান ও নবনির্বাচিত বিধায়ক সতীশ উপাধ্যায়ের নামও আলোচনায় রয়েছে। বিজেপির দীর্ঘদিনের সংগঠক হিসেবে তার রাজনৈতিক দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তা তাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলেছে।
বিজেপির অভ্যন্তরীণ আলোচনায় আরও কয়েকটি নাম উঠে আসছে। পবন শর্মা ও আশিস সুদ তাদের মধ্যে অন্যতম। দলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমীকরণে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বিজেপি জাতিগত দিকটিও বিবেচনায় নিচ্ছে। তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা নেতাদের মধ্যে কৈলাস গাঙ্গওয়াল, রবীকান্ত উজ্জয়ন এবং কৈলাস সিংয়ের নাম সামনে আসছে। দলীয় কৌশলে বৈচিত্র্য আনতে এই নেতাদের দিকে বিজেপি নজর রাখতে পারে।
বিজেপি দিল্লির ইতিহাসে চতুর্থ মহিলা মুখ্যমন্ত্রী আনতে পারে এমন জল্পনাও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু নারীনেত্রীর নাম উঠে এসেছে।
বিজেপির ‘সারপ্রাইজ প্রার্থী’ শিখা রায় গ্রেটার কৈলাস বিধানসভা থেকে আপের সৌরভ ভরদ্বাজকে পরাজিত করেছেন। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী এবং দু’বারের কাউন্সিলর ছিলেন।
শালিমারবাগ থেকে জয়ী রেখা গুপ্তা ২৯ হাজারের বেশি ভোটে আপের বন্দনা কুমারীকে পরাজিত করেছেন। তিনি দিল্লি ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
প্রয়াত সুষমা স্বরাজের কন্যা বাঁশুরি স্বরাজও সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন। আইনজীবী হিসেবে তার সুপরিচিতি রয়েছে এবং তিনি নয়া দিল্লি লোকসভা আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন। যদিও লোকসভা নির্বাচনে আমেঠি থেকে পরাজিত হয়েছেন, তবে তার রাজনৈতিক ক্যারিশমা এবং অভিজ্ঞতা তাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলতে পারে।
ওয়াজিরপুর কেন্দ্র থেকে পুনম শর্মা এবং নজফগড় কেন্দ্র থেকে নীলম পেহেলওয়ান জয়ী হয়েছেন। তাদের রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা বিজেপির কৌশলগত সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
দিল্লি ইতিমধ্যে তিনজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছে— বিজেপির সুষমা স্বরাজ, কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিত এবং আপের অতশী। এবার যদি বিজেপি ২০২৫ নির্বাচনের পর একজন নারীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয়, তবে তিনি হবেন দিল্লির চতুর্থ মহিলা মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা সময়ই বলবে। তবে দিল্লির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই শুরু হয়েছে জল্পনা।