মধ্য নাইজেরিয়ার বেনু রাজ্যে এক ভয়াবহ বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত একাধিক এলাকায় এই নৃশংস হামলা চালানো হয়। শনিবার (১৯ এপ্রিল) গভর্নরের কার্যালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম ফুলানি পশুপালক ও খ্রিস্টান কৃষকদের মধ্যে জমি ব্যবহারের অধিকার নিয়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর ফলেই বারবার দাঙ্গা, হামলা ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে।
ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর জানিয়েছে, দেশটির অনেক পশুপালক মুসলিম ফুলানি জাতিগোষ্ঠীর এবং অনেক কৃষক খ্রিস্টান। ফলে এ ধরনের হামলার পেছনে জাতিগত ও ধর্মীয় উত্তেজনার উপাদানও জড়িত।
বেনু রাজ্যের গভর্নরের মিডিয়া উপদেষ্টা সলোমন ইওরপেভ আলিয়া বলেন, "ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৬ ছাড়িয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।"
ঘটনার পর নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান চলছে। সরকার জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামলার পর মালভূমি রাজ্য সফর করেছেন।
গবেষণা সংস্থা এসবিএম ইন্টেলিজেন্স-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে মধ্য নাইজেরিয়ায় সহিংসতায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ২২ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
এই সহিংসতার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— জমির দখল ও ব্যবহার নিয়ে বিরোধ, ‘আদিবাসী’ বনাম ‘বহিরাগত’ রাজনৈতিক বিতর্ক, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, পশুপালক ও কৃষকের ভূমি ব্যবহারে প্রতিযোগিতা, নাইজেরিয়ার অনেক এলাকায় দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে প্রতিশোধমূলক হামলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ফলে সহিংসতা ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে।
এই মাসের শুরুতেই নাইজেরিয়ার পার্শ্ববর্তী মালভূমি রাজ্যে বন্দুকধারীদের হামলায় ১০০ জনেরও বেশি প্রাণহানি ঘটে। দেশটিতে ধর্মীয়, জাতিগত ও অর্থনৈতিক কারণে সংঘর্ষ প্রায়শই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।