কক্সবাজারের উখিয়ার নাফ নদী থেকে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে এক যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তি স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমানপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে ছৈয়দুল বশর (১৯)। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি দেখতে পান স্থানীয়রা। এরপর পুলিশকে খবর দিলে উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হান্নান মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে উদ্ধার করেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত ১৪ নভেম্বর পাঁচজন বাংলাদেশি নাফ নদীতে মাছ ধরতে গেলে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ তাদের জিম্মি করে। এ সময় ছৈয়দুল বশরকে পিটিয়ে নির্যাতনের পর হাতের বাহু ও ঘাড়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার মরদেহ নাফ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়, যা শনিবার সকালে ভেসে ওঠে।
নিহতের পরিবার জানিয়েছে, ছৈয়দুল বশরসহ অন্যরা বৈধভাবে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তাদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালায়।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফ হোছাইন জানান, "স্থানীয়দের খবর পেয়ে আমরা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।"
নাফ নদী সংলগ্ন সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপগুলোর নানা ধরনের কার্যক্রমের জন্য আলোচনায় রয়েছে। তাদের কারণে স্থানীয় মৎস্যজীবী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এ ধরনের হামলার ঘটনা বন্ধে দুই দেশের সরকারের মধ্যে কার্যকর আলোচনা ও সমঝোতার প্রয়োজন। একইসঙ্গে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।
নাফ নদীতে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা স্থানীয় জনগণের জীবনে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে, যা সীমান্তবর্তী এলাকার স্থিতিশীলতা ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।