চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাট রেললাইনে রাজন দত্ত (৩০) নামের এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ধলঘাট রেলওয়ে স্টেশনের ১০০ মিটার উত্তরে লাশটি পাওয়া যায়।
নিহত রাজন দত্ত পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়নের মৃত মিলন দত্তের ছেলে। তিনি একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের পড়াতেন। প্রতিবেশীদের মতে, রাজন চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে এমবিএ শেষ করলেও কোনো চাকরি না করে ২০১১ সাল থেকে স্থানীয় অ্যাপেক্স কোচিং সেন্টারে পড়াচ্ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজারগামী একটি বিশেষ ট্রেন ধলঘাট রেলপথ দিয়ে অতিক্রম করে। এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয়রা রেললাইনে রাজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। রাজনের একটি পা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, শরীর থেঁতলানো এবং নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে।
ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জুয়েল নাথ জানান, রাজনের ঘরের ড্রয়ারে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে লেখা ছিল:
“আমি মনে করি, আমার এই জন্মের উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়েছে। তাই আমায় এখন এই জীবন ত্যাগ করে চলে যেতে হবে। আমার এই চলে যাওয়াতে কারও কোনো হাত নেই। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ, অকারণে কাউকে কোনো হয়রানি করবেন না। আমার কাছ থেকে কেউ কোনো টাকাপয়সা পাবে না, আমার কোনো ঋণ নেই। সকলের মঙ্গল হোক, বিদায়!”
চিরকুটটি রাজনের লেখা কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
রাজনের বড় ভাই জানান, সকালে রাজনকে ঘরে না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এর মধ্যেই রেললাইনে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজনের লাশ শনাক্ত করেন।
রেল পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কাসেম জানান, লাশটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রেনে কাটা পড়ে রাজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে চিরকুটের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
পটিয়া স্টেশনের স্টেশনমাস্টার নেজাম উদ্দিন জানান, ধলঘাট স্টেশনে কোনো ট্রেন থামে না এবং সেখানে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীও নেই। ফলে দুর্ঘটনার বিষয়ে তাঁর কোনো ধারণা নেই।
রাজন দত্তের লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে। চিরকুটে আত্মহত্যার ইঙ্গিত থাকলেও ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং চিরকুটের সত্যতা পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।