পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিকই-ইনসাফ "পিটিআই" নেতা ইমরান খান পাকিস্তানি জনগণের জন্য এক শক্তিশালী প্রতিকের নাম। ইমরান খানের কারাবন্দির খবরে দেশে তাণ্ডবলীলা শুরু হলেও, এখনও তিনি কারাগার থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি চূড়ান্ত বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে।
আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর ইসলামাবাদে ইমরান খান স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তার চূড়ান্ত এই ডাকে পিটিআই সমর্থকরা সমাবেশের উদ্দেশ্য এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীর দিকে জড়ো হতে শুরু করেছেন। অন্য দিকে সাড়া দেশজুড়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ দমনে করার জন্য পুলিশ প্রস্তুতি নিচ্ছে রেখেছে। এমন টান টান উত্তেজনায় দেশটির পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন বিশ্লেষকরা।
এমন সময় পাকিস্তান সরকার বিক্ষোভ দমন করার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে এবং কোনো ধরনের সমাবেশ অনুমোদন না দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। তবে, ইমরান খানের সমর্থকরা প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তারা যে কোনো উপায়ে এই চূড়ান্ত বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করে ঘরে ফিরবেন। তাদের বিশ্বাস, কোনো বাধাই তাদের থামিয়ে রাখতে পারবে না। এখানে মনে রাখা দরকার, পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই বর্তমানে কারাগারে বন্দি আছে, তাই বিক্ষোভের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
তবে সংবাদমাধ্যম ডন সূত্রে জানা যায়, সমাবেশে পিটিআই কোন একক নেতা নিয়ে আসবে না। নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা নিজ উদ্যোগে বিক্ষোভ করবেন। যদি কোনো বাধার সম্মুখীন হন, তবে তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে পিছনে যাবে না।
পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ পাঞ্জাব রাজ্য সরকার বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কায় তারা তিন দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে এবং ১০ হাজার ৭০০ পুলিশ সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাজধানী ইসলামাবাদ যাওয়ার বিভিন্ন সড়ক মোটামুটি ব্লক করে রাখা হয়েছে।
তার আগে, ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ভিডিও বার্তায় পিটিআই সমর্থকদের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বুশরা জানিয়েছেন যে, ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভ কোনোভাবেই পরিবর্তন করা হবে না, কারণ এটিই চূড়ান্ত ডাক। বুশরা বিবির এই শক্তিশালী বক্তব্য পাকিস্তানে দলটির সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে বুশরা বিবির আহ্বানকে ঘিরে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বিপজ্জনক হিসেবে দেখছেন এবং সতর্ক করেছেন, ২৪ নভেম্বরের বিক্ষোভ যদি সহিংসতায় রূপ নেয়, তবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও গভীর হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, পাকিস্তানে ২৪ নভেম্বর কি আবারও এক অভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে? এই বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কারন পাকিস্তানের রাজনীতি এখনও অস্থিতিশীল।