পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পাহাড় কাটা নিয়ে আমি টম অ্যান্ড জেরি আর খেলতে চাই না।’ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আজ রোববার দুপুরে থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সভাটি পরিবেশ সংরক্ষণ ও পলিথিন ব্যবহার রোধে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটির মেয়র শাহাদাত হোসেন। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তৌহিদ হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আহসান হাবীব এবং নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘রাত জেগে পাহারা দিতে হবে। মালিকদের তালিকা তৈরি করুন, গ্রেপ্তার করুন। টম অ্যান্ড জেরির মতো এই খেলা বন্ধ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাছ কাটলে গাছ লাগানো সম্ভব, কিন্তু পাহাড় কাটলে নতুন পাহাড় তৈরি সম্ভব নয়। সরকারের আইন অনুযায়ী অপরিহার্য জাতীয় প্রয়োজনে ছাড়া পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’
পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে তিনি বলেন, ‘পলিথিনের বিকল্প রয়েছে। আমাদের দাদা-নানারা চটের ব্যাগ ব্যবহার করতেন। এখন তা ভুলে গেছি। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’
শব্দদূষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হবে। আপনারা চালকদের সচেতন করুন। শব্দদূষণ রোধে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি শিশুদের সচেতনতা কাজে লাগাতে হবে।’
সভায় তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘পাহাড় কাটা, পলিথিন এবং শব্দদূষণের পাশাপাশি আমরা ইটভাটা ও শিল্পদূষণ মোকাবিলায় কার্যক্রম চালু করব।’
সভায় মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘২০০৫-০৬ সালে পলিথিন নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রমে আমি যুক্ত ছিলাম। এখনও আমরা এ বিষয়ে সফলতা অর্জনে কাজ করতে চাই।’
সভায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া স্থপতি জেরিনা হোসেন, সুভাষ বড়ুয়া এবং সাংবাদিক আলীউর রহমানসহ অন্যান্যরা সভায় বক্তব্য রাখেন।
সভায় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। পাহাড় কাটা, পলিথিন ব্যবহার এবং শব্দদূষণ রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’