পিরোজপুর জেলা পুলিশ তাদের দক্ষ অভিযানের মাধ্যমে ৪০টি মোবাইল ফোন, অনলাইন ট্রানজেকশনের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ৯০ হাজার টাকা এবং ৩টি হ্যাক হওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ এসব উদ্ধারকৃত সামগ্রী প্রকৃত মালিকদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ আবু নাসের।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আনজিরা বেগম নামের এক নারীর স্বামী বিদেশে অবস্থান করছেন। প্রতারকরা তার স্বামীর ইমো (IMO) অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে আনজিরা বেগমের কাছে কল দেয়। তারা বিপদে পড়ার কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর অনুরোধ করে। সরল বিশ্বাসে আনজিরা বেগম অনলাইন ট্রানজেকশনের মাধ্যমে প্রতারকদের চাহিদামতো টাকা পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে স্বামীর সাথে কথা বলে তিনি জানতে পারেন যে, এটি একটি প্রতারণার ঘটনা এবং তার স্বামী আদৌ কোনো বিপদে পড়েননি।
ঘটনাটি বুঝতে পেরে আনজিরা বেগম পিরোজপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিষয়টি তদন্ত করে পিরোজপুর জেলা পুলিশ অভিযানে নামে এবং কুষ্টিয়া থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করে। একইসঙ্গে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ৪০টি চুরি বা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন এবং ৩টি হ্যাক হওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন, টাকা এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তাদের প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ভুক্তভোগীরা তাদের সম্পদ ফিরে পেয়ে পিরোজপুর জেলা পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বিশেষভাবে জেলা পুলিশ সুপার সহ অভিযানে অংশ নেওয়া সকল পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ আবু নাসের আনুষ্ঠানিকভাবে ভুক্তভোগীদের হাতে উদ্ধারকৃত মোবাইল, টাকা এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বুঝিয়ে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মোঃ মুকিত হাসান খানসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা।
পিরোজপুর জেলা পুলিশ সাধারণ জনগণকে অনলাইন প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। অপরিচিত সূত্র থেকে আসা ফোন কল বা অনলাইন বার্তায় ব্যক্তিগত তথ্য বা আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। যদি কেউ এমন প্রতারণার শিকার হন, তাহলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় অভিযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পিরোজপুর জেলা পুলিশের এই সফল অভিযান অনলাইন প্রতারণা ও চুরি রোধে তাদের দক্ষতার প্রমাণ রাখে। এটি সাধারণ জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা ও বিশ্বাস সৃষ্টি করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের কার্যকর ভূমিকার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।