বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারে এক মতবিনিময় সভায় দেশের সামুদ্রিক সম্ভাবনা এবং কক্সবাজারের অর্থনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, "আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সম্ভব। এটি দেশের ব্যবসার জন্য একটি বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করে। তিনি কক্সবাজারের সামুদ্রিক সম্ভাবনা তুলে ধরে জানান, এই অঞ্চলের সামুদ্রিক সম্পদ ও বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আরো শক্তিশালী হতে পারে।
ড. ইউনূস কক্সবাজারের ব্যাপক উন্নতির কথা তুলে ধরে বলেন, এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং এটি দেশের অর্থনীতিরও কেন্দ্র হতে যাচ্ছে। তিনি বিশেষভাবে কক্সবাজারের কৃষি এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। কক্সবাজারের লবণ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কিনা। এর মাধ্যমে তিনি কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ রপ্তানি করার সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরেন।
এছাড়াও, প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারে পাইলট ভিত্তিতে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখেন। তিনি বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন এবং স্থানীয় জনগণকে এই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস আরও বলেন, কক্সবাজার একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হতে পারে এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হতে পারে। তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান, যাতে তারা ভবিষ্যতে উন্নয়নের সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করতে পারে।
মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে তাদের প্রস্তাব ও দাবি তুলে ধরেন। ড. ইউনূস স্থানীয় জনগণের সঙ্গে এই আলোচনা শেষে কক্সবাজারের উন্নয়নে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেন।
এই সভার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্ভাবনা, কৃষি ও শক্তির উৎস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কক্সবাজারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।