বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাপান। বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের নতুন রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, "আমরা বাংলাদেশে আমাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শুধু চালিয়েই যাব না, বরং আরও সম্প্রসারণ করব।" প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাপানকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "আমাদের সরকার এই সম্পর্ককে আরও জোরালো করতে আগ্রহী।" তিনি আরও বলেন, "জাপান আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে একটি এবং এটি বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন অংশীদার।"
জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী, যা বহু বছর ধরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে জাপান বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি গন্তব্যের একটি। বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৫০টিরও বেশি জাপানি কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অধ্যাপক ইউনূস জানান, বাংলাদেশ এখন জাপানসহ সার্ক ও আসিয়ানভুক্ত এবং পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের দেশগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ খুঁজছে। তিনি বলেন, "আমরা পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। এখন ব্যবসা করার সময়।"
রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি জাপান সরকারের অর্থায়নপুষ্ট চলমান বড় বড় প্রকল্পগুলোর প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এর মধ্যে রয়েছে, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকা মেট্রো রেল, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্প।
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের জন্য জাপানের অব্যাহত সহায়তায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি স্থায়ী সমাধানে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান, যা উভয় দেশের জন্যই উপকারী। জাপানের বিনিয়োগ ও উন্নয়ন সহযোগিতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে এবং ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।