ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের আদালতের আদেশের প্রতিবাদে চালকরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার (২৪ নভেম্বর) দিনব্যাপী এই বিক্ষোভের কারণে রাজধানীবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
গত মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে, এ ধরনের রিকশা চলাচল বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকার পুলিশ কমিশনার এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম সিদ্দিকী।
বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন প্যাডেল চালিত রিকশা মালিক ঐক্যজোটের সভাপতি জহুরুল ইসলাম মাসুম এবং সেক্রেটারি মো. মমিন আলী এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটে ব্যাটারিচালিত রিকশার পরিবেশগত ক্ষতি এবং নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে এসব রিকশা চলাচল বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়।
আদালতের আদেশের প্রতিবাদে চালকরা শনিবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। তাঁদের দাবি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হলে তাঁদের জীবিকা সংকটে পড়বে।
এদিকে, রাজধানীর ব্যস্ত সড়কগুলোতে বিক্ষোভের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী এবং জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলে দীর্ঘসময় অপেক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে।
চালকদের জীবনযাত্রার সংকট এবং আদালতের আদেশের মাঝে সমন্বয় করতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে আপিল বিভাগের কাছে আবেদন উপস্থাপন করা হবে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং এর বিরুদ্ধে চালকদের প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। আপিল বিভাগের রায় এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে রাজধানীর সড়ক পরিস্থিতি এবং চালকদের ভবিষ্যৎ।