কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে শূন্যরেখায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক সিসি ক্যামেরা স্থাপনকে কেন্দ্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজিবির জোরালো অবস্থান ও তীব্র প্রতিবাদের মুখে বিএসএফ শূন্যরেখা থেকে সিসি ক্যামেরা অপসারণের আশ্বাস দেয়।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশজানী সীমান্তে, স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেনের বাড়ির উঠানে। বৈঠকে বিএসএফের ১৬২ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট অনীল কুমার মনোজ ও বিজিবির পক্ষে কুড়িগ্রাম ২২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান নেতৃত্ব দেন।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ভারতের ছোট গাড়ল ঝড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের দিকে তাক করে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯এস-এর ৯৭৮ নম্বর পিলারের পাশে শূন্যরেখার একটি ইউক্লিপটাস গাছে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে। সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি বিজিবিকে জানালে, বিজিবি দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানায়। তারা ক্যামেরাটি অবিলম্বে অপসারণের আহ্বান জানায়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্প এবং কম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে মঙ্গলবার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, “বৈঠকে জোড়া মসজিদ ও সিসিটিভি ক্যামেরা ইস্যুতে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বিএসএফ কমান্ড্যান্ট অনীল কুমার মনোজ জানান, সীমান্তের নিরাপত্তার স্বার্থে শূন্যরেখায় সিসি ক্যামেরাটি স্থাপন করা হয়েছিল। তবে বিজিবির কড়া প্রতিবাদের কারণে তারা এটি অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, বৈঠকে জোড়া মসজিদ এলাকায় শূন্যরেখায় নির্মিত টিনের স্থাপনা খুলে ফেলা এবং সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো অবৈধ স্থাপনা তৈরি না করা নিয়েও আলোচনা হয়।
পতাকা বৈঠকের পর বিজিবির দিয়াডাঙ্গা সীমান্ত ফাঁড়ির উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সীমান্ত নিরাপত্তা এবং দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পায়।
বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সংলাপের মাধ্যমে সীমান্তসংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা সমাধানের এই উদ্যোগ ইতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে উভয় পক্ষই সীমান্তে উত্তেজনা এড়াতে এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেবে বলে আশা করা যায়।