চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মাঝেরচরে এমভি আল–বাখেরা জাহাজে সাত শ্রমিক হত্যার বিচার এবং নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে নারায়ণগঞ্জে দ্বিতীয় দিনের মতো নৌশ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে। এই ধর্মঘটের ফলে নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। নেতারা অভিযোগ করেন, নদীপথে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি চললেও প্রশাসন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
ধর্মঘটের কারণে শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদীতে পণ্যবাহী লাইটার জাহাজের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে জাহাজগুলো নোঙর করে রাখা হয়েছে। শ্রমিকেরা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে।
বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং জড়িতদের চিহ্নিত করতে সঠিক তদন্ত প্রয়োজন। সারা দেশে পণ্যবাহী নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নিহতদের পরিবারের জন্য জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, নৌপথে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষা দিতে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।
গত সোমবার চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মাঝেরচরে এমভি আল–বাখেরা জাহাজে পাঁচ শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় আরও দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেও তাঁদের মৃত্যু হয়।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে শ্রমিক সংগঠনগুলো আট দফা দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ডের বিচার, প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন, নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান।
ধর্মঘটের ফলে দেশের নৌপথে পণ্য পরিবহন কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে শিল্পখাতে সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, যাতে নৌপথ স্বাভাবিক হয় এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।