স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সভায় তিনি পুলিশের বর্তমান কার্যক্রম ও প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এবং পুলিশ বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ফাংশনাল (সক্রিয়)। তিনি বলেন, "পুলিশ বাহিনীর যে সামর্থ্য আছে এবং সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব, আনসার ও বিজিবি সহ অন্যান্য বাহিনী তাদের সঙ্গে রয়েছে, তাই যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের কোনো অসুবিধা হবে না।"
এছাড়াও, তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মোট ২ লাখ ২ হাজার অপারেশনাল পুলিশ রয়েছে, এবং প্রায় ১২ হাজার সিভিল ও অন্যান্য সহায়ক কর্মী কাজ করছেন। এর মাধ্যমে পুলিশের প্রস্তুতি পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তারা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রশাসনিক সভায় আরো জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ অনুযায়ী, আগামী ২০২৫ সালের শেষ দিকে কিংবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে সময়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য তাদের প্রস্তুতি নির্ধারণ করা হচ্ছে।
এছাড়া, ইজতেমা মাঠে গত কিছুদিনের সংঘর্ষে নিহত ৪ জনের ঘটনায় উক্ত সময়ের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইজতেমা ময়দানে যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তা খুব তাড়াতাড়ি কেটে যাবে। বর্তমানে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার মূল তারিখে আয়োজিত হবে।” তিনি আরো বলেন, “যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না এবং তাদের কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।”
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা মেজর রাফি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, কৃষি অধিদপ্তর সহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ।
এছাড়া, উক্ত মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সামগ্রিক প্রস্তুতির পাশাপাশি অপরাধ দমনে সরকারের কঠোর অবস্থান তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের যে কোনো পরিস্থিতির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এখানে বলা যায় যে, বাংলাদেশ সরকারের আইনের প্রয়োগ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসন যথেষ্ট প্রস্তুত রয়েছে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরো শক্তিশালীভাবে কাজ করবে এবং সব ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।