রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নাগরিক সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে দেওয়া বক্তব্যের জেরে একদল লোক তার ওপর হামলা চালায়। শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ‘ফ্যাসিবাদ বিলোপ ও নতুন সংবিধানের’ দাবিতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে। ওই সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ফারুক হাসান। বক্তব্যে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভায় উপস্থিত কয়েকজন মঞ্চে উঠে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নামার পর একদল লোক তাকে ঘিরে ফেলে এবং অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে ধাওয়া করে ঢাকা মেডিকেল অভিমুখী সড়কে নিয়ে যায় এবং সেখানেও মারধর চালায়। এ সময় কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুরও করা হয়।
হাসপাতাল থেকে ফেসবুক লাইভে এসে ফারুক হাসান হামলার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের একটি প্রোগ্রামে আমাকে অতিথি হিসেবে রাখা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমি আমার রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছি। ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। আমার মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে গেছে।’
ফারুক বলেন, ‘আমি বক্তব্যে বলেছি, আমরা একটি বিপ্লবী জাতীয় সরকার চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই বিপ্লবী সরকার না হওয়ার জন্য যারা দায়ী, তারা হলো ঐ ৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টে বৈঠক করা ব্যক্তিরা। সেখান থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের ফর্মুলা এসেছে। আমার বক্তব্যের জন্য ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আমার ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।’
ঘটনার পর গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান শাহবাগ থানায় মামলা করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল নয়, হামলাকারীরা জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের ব্যক্তিরা। আমি থানায় যাচ্ছি। আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির মজুমদার বলেন, ‘ফারুকের ওপর হামলার সঙ্গে আমাদের সংগঠনের কেউ জড়িত নয়। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন ফারুক। এতে কিছু অতিথি তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত কয়েকজন উত্তেজিত হয়ে ফারুকের ওপর হামলা চালায়।’
গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করা হবে। পুলিশকে দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানানো হয়েছে।