তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ ও সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থি তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের কোনো ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী বা শুরায়ে নেজামের অনুসারীদেরও বড় কোনো জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সাদপন্থি তাবলিগ জামাতের কোনো অনুসারী কাকরাইল মসজিদে জমায়েত হতে পারবেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে মসজিদ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এ নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাবলিগ জামাতের মধ্যে মতবিরোধ চরমে পৌঁছেছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সাদপন্থি এবং শুরায়ে নেজামের অনুসারীদের মধ্যে বিভেদ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর ভোররাতে টঙ্গীর ইজতেমার মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হন এবং বহু আহত হন। এরপর ইজতেমার মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। কাকরাইল মসজিদকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সাদপন্থিদের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হলো।
সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবিতে শুরায়ে নেজামের অনুসারীরা মঙ্গলবার কাকরাইল মসজিদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এর আগে ইজতেমার মাঠে সংঘর্ষের পর থেকেই কাকরাইল কার দখলে থাকবে, তা নিয়ে সমস্যা শুরু হয়।
সরকারি নির্দেশনার ফলে কাকরাইল মসজিদ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকবে। যদিও জনসাধারণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তৎপর থাকবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত তাবলিগ জামাতের ভেতরকার মতবিরোধ মেটাতে কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এ পদক্ষেপ উত্তেজনা প্রশমনে সাময়িক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও উত্তেজনা সামলাতে সাদপন্থি অনুসারীদের কাকরাইলে জমায়েত নিষিদ্ধ। ১৮ ডিসেম্বর সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর থেকেই উত্তেজনা বৃদ্ধি। কাকরাইল মসজিদ এলাকায় জমায়েত নিষিদ্ধ করে প্রশাসনিক সতর্কতা বাড়ানো। সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে, এই বিভেদ মেটাতে সরকার দীর্ঘমেয়াদি কী পদক্ষেপ নেবে।
কাকরাইল মসজিদকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের বিভেদ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখলেও মতবিরোধ সমাধানে আরও উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।