কক্সবাজারের টেকনাফের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি ইকো রিসোর্টের ২৬টি কক্ষ পুড়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো পর্যটক হতাহত হননি। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে দ্বীপের গলাচিপা এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, পশ্চিম সৈকতের গলাচিপায় অবস্থিত সাইরি ইকো রিসোর্টের অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। দ্রুত বাতাসের কারণে আগুন বিচ ভ্যালি ও কিংশুক ইকো রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডে সাইরি ইকো রিসোর্টের অভ্যর্থনাকক্ষ এবং বিচ ভ্যালি ইকো রিসোর্টের ১৮টি কক্ষ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। একইসঙ্গে কিংশুক ইকো রিসোর্টের ৭টি কক্ষও আগুনে ধ্বংস হয়ে যায়। মালিকপক্ষ ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে না পারলেও ঘটনায় উল্লেখযোগ্য সম্পদহানি হয়েছে।
আগুন লাগার সময় অধিকাংশ পর্যটক রিসোর্টের বাইরে থাকায় বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে অধিকাংশ পর্যটকের মালামাল পুড়ে গেছে। বিচ ভ্যালির ইকো রিসোর্টে অবস্থানরত এক দম্পতি জানান, তাঁরা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং সব কক্ষ পুড়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দ্বীপের বাসিন্দা ও সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাইরি ইকো রিসোর্ট থেকে আগুন শুরু হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
কিংশুক ইকো রিসোর্টের মালিক সরওয়ার আলম পরিবারসহ রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন। মুঠোফোনে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, "আমি আমার বউ-বাচ্চা নিয়ে দীর্ঘদিন পর সেন্ট মার্টিন এসেছি। আমার বাচ্চাদের সামনে তিলে তিলে গড়া স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।"
সেন্ট মার্টিনের ইকো রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের মতে, অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা কঠিন হবে।