দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ১ ডিসেম্বর (রোববার) থেকে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট থেকে দুটি জাহাজ চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন এমবি বারো আউলিয়া জাহাজের পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
মাহবুবুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে এক হাজার পর্যটক অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই সময়ে পর্যটকরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
সেন্টমার্টিন রয়েল বিচের পরিচালক জাহেদ হোসেন বলেন, "দুই মাস ধরে পর্যটন মৌসুম চললেও পর্যটক না আসার কারণে দ্বীপবাসী চরম ক্ষতিগ্রস্ত। হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং দোকানপাটগুলোতে বিনিয়োগ করে এখন লোকসানের মুখে পড়েছি।" তিনি আরও জানান, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হলে দ্বীপের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হবে।
কক্সবাজার অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আনোয়ার কামাল জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান সংঘাতের কারণে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে জাহাজ চলাচল আপাতত স্থগিত। তবে ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে কর্ণফুল ও বারো আউলিয়া নামের দুটি জাহাজ চলাচল শুরু করবে। তিনি আরও জানান, পরে সাবরাং পয়েন্ট ব্যবহার করে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচলের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেনি। প্রশাসনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এ পরিকল্পনা।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা মারাত্মক অর্থনৈতিক চাপে পড়েছেন। হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলো পর্যটকদের আগমন পুনরায় শুরু হলে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে টেকনাফের জেটিঘাট ব্যবহার করতে না পারা এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিলম্ব পর্যটন কার্যক্রমে নতুন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
পর্যটন মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ সময় পেরিয়ে গেলেও ইনানী জেটিঘাট দিয়ে সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দ্বীপের অর্থনীতি ও পর্যটন খাতের জন্য নতুন আশা জাগাচ্ছে। তবে প্রশাসনিক অনুমোদন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অনিশ্চিত রয়ে যাবে।