২৭তম বিসিএসের নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জন চাকরি ফেরতের দাবিতে করা আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগ এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করবে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এই দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে কারা শুনানি করেছেন? আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
গত বছরের ৭ নভেম্বর নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনের পক্ষে করা আপিল শুনানির আদেশ দিয়েছিল আদালত।
রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন এই সংক্রান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়েছিল আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ "লিভ টু আপিল" মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
২৭তম বিসিএসে প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তকে বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ বহাল রাখে। এরপর এই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন পৃথক আবেদন করেন।
আইনজীবীদের যুক্তি ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, "এক-এগারোর সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসের দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো ক্ষমতা ছিল না।" "পিএসসি আইন ও বিধিতেও দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষার সুযোগ নেই।"
মামলার বিবরণ ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে। ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে। প্রথম রায়ের বিরুদ্ধে ২৫ জন নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থী আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেন। দ্বিতীয় রায়ের বিরুদ্ধে সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে।
২৭তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি: ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩,৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। ২০০৭ সালের ৩০ মে: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৭ সালের ১ জুলাই: পিএসসি প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল ঘোষণা করে। ২০০৭ সালের ২৯ জুলাই: দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর: দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩,২২৯ জন উত্তীর্ণ হন ও নিয়োগ পান।
২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জন চাকরি ফিরে পাবেন কি না, সেটি নির্ধারণ হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের রায়ে। আদালতের রায় এই দীর্ঘ বিতর্কিত প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত মীমাংসা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।