বাঙালি কোথাও কোনও ব্যাপারে এগিয়ে না-থাকলেও কিছু ‘ফুলকি’ এখনও তিনি দেখতে পান। বছরের বেস্ট পুরস্কার দেওয়ার সময় অভীকবাবুর প্রতিবারই মনে হয়, ‘‘কিছু আলোর ফুলকি এখনও আছে। ভবিষ্যতের কিছু ইঙ্গিত আছে। আর বেশ কিছু কৃতী আছেন, যাঁদের নাম প্রায় কেউই জানেন না।’’
শূন্য’ বললে গণিতজ্ঞেরা রাগ করতে পারেন বলে নয়। তিনিও মনে করেন, কৃতী বাঙালির সংখ্যা বিশ্ব বা দেশের মানচিত্রে এখনও ‘শূন্য’ হয়ে যায়নি।
বছরের বেস্ট সন্ধ্যায় অভীক সরকার তাঁর ১২৭ শব্দের ভাষণ শুরু করেন ‘দেশ’ পত্রিকার একটি প্রচ্ছদকাহিনির বিষয় বাংলা চলচ্চিত্রের ‘অধোগতির’ প্রসঙ্গ ছুঁয়ে। বলেন, ‘‘বাংলা ছবির অধোগতির কথা তো আমরা বহু দিন ধরেই জানি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের আর কোথায় ঊর্ধ্বগতি আছে? দু’একটা নোবেল প্রাইজ়, দু’একজন গায়ক আছেন। তা-ও তাঁরা এই সময়কালের নন। আর কিছু প্রবাসী বাঙালি। কলকাতার বা পশ্চিমবঙ্গের নন। তাঁদের সংখ্যাও নগণ্য।’’
২০২৪ সালের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে অভীকবাবুর বক্তৃতায় এসেছিল ব্যবসাবিমুখ বাঙালির ধারাবাহিকতার কথা। বলেছিলেন, বাঙালির ব্যবসাবিমুখতা ৫০ বছর আগেও ছিল। ধরে নেওয়া যেতে পারে ৫০ বছর পরেও থাকবে। কিন্তু যে সব ক্ষেত্রে কৃতী বাঙালির একটা ধারা ছিল, তেমন ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গে বা কলকাতায় এখন উল্লেখ করার মতো ঊর্ধ্বগতি খুঁজে পাওয়া কঠিন। তিনি মনে করেন, ‘‘পৃথিবী তো নয়ই, ভারতবর্ষের মধ্যেও কোনও ব্যাপারে আমরা (বাঙালিরা) এগিয়ে নেই।’’
তবে একইসঙ্গে এ-ও ঠিক যে, কোথাও কোনও ব্যাপারে এগিয়ে না-থাকলেও কিছু ‘ফুলকি’ এখনও তিনি দেখতে পান। বছরের বেস্ট পুরস্কার দেওয়ার সময় অভীকবাবুর প্রতিবারেই মনে হয়, ‘‘কিছু আলোর ফুলকি এখনও আছে। ভবিষ্যতের কিছু ইঙ্গিত আছে। আর বেশ কিছু কৃতী আছেন, যাঁদের নাম প্রায় কেউই জানেন না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছি দেখাতে যে, আপাতদৃষ্টিতে মনে হলেও বাঙালি সম্পূর্ণ রত্নহীন নয়। সেই বাঙালিকে বাংলার সঙ্গে পরিচিত করানোই আমাদের উদ্দেশ্য।’’