দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক ড্রোন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভারত অভিযোগ করে, পাকিস্তান ভারতীয় ভূখণ্ড ও কাশ্মীরে তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও পাল্টা দাবি করেছে, তারা ২৫টি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
ড্রোন হামলা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সীমান্ত অঞ্চল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এক বিপজ্জনক মোড়।
ভারতীয় ও পাকিস্তানি উভয় পক্ষই এখন শুধু কামান নয়, 'চালকবিহীন অস্ত্র' ব্যবহার করছে, যা আধুনিক যুদ্ধকে আরও নিখুঁত ও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, ৩৬ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছে ভারতীয় গুলিবর্ষণে। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানের গোলায় ১৬ জন ভারতীয় বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। ভারত দাবি করেছে, কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধে এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে ইসলামাবাদ এর সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।
ড্রোন ও UAV (Unmanned Aerial Vehicle) প্রযুক্তি এই সংঘর্ষে নতুন মাত্রা এনেছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায়, করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে ২৫টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই ইসরায়েলি-তৈরি হারোপ ড্রোন। এই ড্রোনগুলো শত্রু রাডার ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসে সক্ষম।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা বেশ কয়েকটি পাকিস্তানি বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম নিষ্ক্রিয় করেছে।
বিশ্লেষকদের মত, জাহারা মাতিসেক, মার্কিন নৌ-যুদ্ধ কলেজের অধ্যাপক, বলেন, “ভারত-পাকিস্তান সংঘাত এখন এমন এক ড্রোন যুগে প্রবেশ করেছে যেখানে যুদ্ধ হতে পারে অদৃশ্য, নির্ভুল এবং আরও বেশি ধ্বংসাত্মক।”
এজাজ হায়দার, পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক, বলেন, “পাকিস্তানের ড্রোন বহর বৈচিত্র্যময় — চীন, তুরস্ক এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ১০০০টিরও বেশি ড্রোন রয়েছে।”
ভারতের ড্রোন প্রযুক্তিতে রয়েছে IAI Searcher, Heron, Harpy, Harop, যা গোয়েন্দা নজরদারি থেকে শুরু করে লেজার-নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পর্যন্ত সক্ষম।
ওয়াশিংটন সহ বিভিন্ন বিশ্বশক্তি দুই দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। কারণ, পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের ড্রোন যুদ্ধ যে কোনও সময় সম্পূর্ণ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।