সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন শুরু করায় টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ময়মনসিংহ, সিলেট, মেহেরপুরসহ অন্তত পাঁচটি জেলার সীমান্ত এলাকায় বিজিবির তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের টহল এবং জনগণকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখন তারা গরু চরাতে সীমান্ত এলাকায় যাচ্ছেন না। বিজিবি নিয়মিত মাইকিং করে মানুষজনকে সতর্ক করছে।
গোবরাকুড়া বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. আজিবুল হাসান বলেন, “টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে। বিএসএফ যদি কোনো অপতৎপরতা চালায়, আমরা তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত।”
বিজিবির একটি সূত্র জানায়, বিএসএফ তাদের ক্যাম্পে সিসিটিভি ক্যামেরা ও সাদা বাতি স্থাপন করছে। আগের লাল বাতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া গুগল ম্যাপে বিএসএফ ক্যাম্প সরিয়ে ফেলা হলেও বিজিবির ক্যাম্প দৃশ্যমান রয়েছে।
হালুয়াঘাটের বরাক গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম ও গিয়াস উদ্দিন বলেন, “বিজিবির টহল খুবই কড়া। সীমান্তে গরু নিয়ে যাওয়া বন্ধ। কেউ ঢুকতে পারবে না, আমরা সতর্ক আছি।”
ময়মনসিংহ সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বিএসএফ যদি সদস্য সংখ্যা বাড়ায়, আমরাও বিজিবির সদস্য বাড়িয়ে দিচ্ছি। সীমান্তে পুশ ইন যেন না হয়, সে জন্য টহল জোরদার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ধারণা, ভারত কখনও বাংলাদেশির ছদ্মবেশে অন্য কাউকে ঢোকানোর চেষ্টা করতে পারে। পুলিশ, আনসার ও স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করে সার্বক্ষণিক পাহারা চলছে।”
গত ১২ দিনে মেহেরপুর, খাগড়াছড়ি, সাতক্ষীরা, মৌলভীবাজার ও সিলেট সীমান্ত দিয়ে মোট ৩১৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত। সবচেয়ে বেশি পুশ ইন হয়েছে মৌলভীবাজার সীমান্তে (১৪৮ জন)।
সীমান্তে পুশ ইন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হয়েছে। বিজিবির সতর্ক অবস্থান এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতাই এই সমস্যা প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি। সরকার ও প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি।