বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন ভবনে আয়োজিত এক আলোচনায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণী নয়, এটি বাংলাদেশের গর্ব এবং জাতিসত্তার প্রতীক। তিনি বলেন, "যেমন আমরা সুন্দরবন নিয়ে গর্ব করি, তেমনি গর্ব করি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েও। সাহস, ভালোবাসা ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে আমরা বাঘকে দেখি। ক্রিকেটারদের ‘টাইগার’ নামে ডাকাও সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ।"
সভায় তিনি সুন্দরবনে বাঘের বর্তমান সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্য তুলে ধরেন এবং হরিণ শিকার নিয়ন্ত্রণ, বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড রোধ এবং চোরা শিকার বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, মানুষ-বাঘ দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় সামাজিক সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, "কারা প্রকৃত চোরাকারবারি এবং কারা বিকল্প জীবিকার সুযোগ পেলে তা গ্রহণ করবে, এই পার্থক্য নির্ধারণ জরুরি। আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে বাঘকে টিকিয়ে রাখতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।"
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নেন দেশি-বিদেশি পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও দুবাই সাফারি পার্কের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বিপাশা হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ, খুলনার বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ এবং বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের সংরক্ষক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী।
অনুষ্ঠানে ‘সুন্দরবনে সংঘাতপ্রবণ বাঘ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ এবং ‘টাইগারস্ অব দ্য সুন্দরবনস’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করেন সুন্দরবনভিত্তিক পটের গান।