চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে— এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে বন্দর ব্যবস্থাপনায় যুক্ত করা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশ বহুমাত্রিকভাবে উপকৃত হবে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশিরা বিশ্বজুড়ে বন্দর পরিচালনায় সক্ষম হবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। বর্তমানে এই হৃৎপিণ্ড দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। একে শক্তিশালী করতে হলে অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা যাদের সাথে চুক্তি করছি তারা ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় সফলভাবে বন্দর পরিচালনা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো, এই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে দ্রুত শেখা এবং ২০৩১ সালের মধ্যে নিজেরাই বন্দর পরিচালনায় পারদর্শী হয়ে ওঠা। আমি নিশ্চিত, ২০৩৬ সালের মধ্যে বিশ্বের বহু বন্দরে বাংলাদেশিরাই ব্যবস্থাপকের ভূমিকা পালন করবেন।”
ড. ইউনূস বলেন, “বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কাদের দেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে বলার প্রয়োজন নেই। তবে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা বিশ্বের সেরা। কিছু মানুষ এই বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করব— এ ধরনের ভিত্তিহীন বিরোধিতায় কান দেবেন না এবং যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের প্রতিহত করুন।”
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “যেসব দেশে এসব প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে, সেসব কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব বা নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েনি।”
ড. ইউনূস বলেন, “আধুনিক বন্দর কেবল বাংলাদেশ নয়, বরং নেপাল, ভূটানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখবে। চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত উপকূলজুড়ে নতুন নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে। সমুদ্রসম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে গড়ে উঠবে আধুনিক মাছচাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের শিল্প। এতে বিপুল কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটবে।”