চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট কমাতে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা ১৫টি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে শিপিং সংশ্লিষ্ট মহলে।
জানা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের পথে ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন পেয়েছে। এই জাহাজগুলো সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে পণ্য পরিবহন করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক বিশেষ সভায় ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। সভায় শিপিং এজেন্টদের নিজ উদ্যোগে সেই জাহাজগুলোর তালিকা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, “বিশ্বে দুর্যোগ ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজ কমানোর নজির নেই। বরং অন্যান্য দেশ বন্দর কার্যক্রমে গতি আনতে জাহাজ ভেড়াতে উৎসাহ দিয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “জাহাজ চলাচল কমলে আমদানি-রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজ বেড়ে গেলে শিপিং ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরং কনটেইনার ব্যবস্থাপনায় আধুনিক উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”
অন্যদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে জাহাজজটের কারণে। বিষয়টি মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “এটি সংখ্যা কমানোর বিষয় নয়, বরং জাহাজ চলাচল যৌক্তিক পর্যায়ে আনাই আমাদের উদ্দেশ্য। ছোট আকারের ও অ্যাডহক ভিত্তিতে পরিচালিত জাহাজ ব্যবস্থাপনায় সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাই প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রয়োজন। অপ্রয়োজনীয় জাহাজ কমিয়ে কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে আমদানি-রপ্তানির গতি যেমন বাড়বে, তেমনি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও বন্দরের অবস্থান শক্ত হবে।