ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করলেন বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু ‘চেনাব রেল ব্রিজ’। জম্মু ও কাশ্মীরের রেয়াসি জেলার চেনাব নদীর ওপর নির্মিত এই স্থাপত্যকীর্তি উচ্চতায় ছাড়িয়ে গেছে আইফেল টাওয়ারকেও। প্রকৌশল ও প্রযুক্তির এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে এই সেতু বিশ্ব রেলইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে।
ইস্পাত ও কংক্রিট দিয়ে তৈরি এই সেতুর দৈর্ঘ্য ১,৩১৫ মিটার এবং উচ্চতা নদীপৃষ্ঠ থেকে ৩৫৯ মিটার (১,১৭৭ ফুট)। তুলনায়, আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা ৩৩০ মিটার। ফলে এটি বিশ্বে সর্বোচ্চ রেলসেতুর মর্যাদা পেয়েছে।
ভারতীয় রেলওয়ের দাবি অনুযায়ী, চেনাব সেতুটি ১২০ বছর স্থায়ী হবে এবং এটি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার গতির ঝড়ও সহ্য করতে সক্ষম। এটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সুরক্ষা ব্যবস্থা।
চেনাব রেলসেতুটি ‘উধমপুর–শ্রীনগর–বারামুল্লা রেল সংযোগ (USBRL)’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কাশ্মীর উপত্যকা রেলপথে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হলো।
এই ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে রয়েছে ৩৬টি সুড়ঙ্গ এবং ৯৪৩টি সেতু। প্রধান প্রকল্পের অংশ হিসেবে আগামীকাল ৭ জুন থেকে শ্রীনগর ও কাত্রার মধ্যে চালু হচ্ছে আধুনিক ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “চেনাব সেতু শুধু একটি প্রকৌশল কীর্তি নয়, এটি নতুন ভারতের আত্মবিশ্বাস, স্থায়িত্ব ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক।” তিনি আরও বলেন, এই রেলপথ কাশ্মীরবাসীর জীবনযাত্রা বদলে দেবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই রেল সংযোগ কাশ্মীরের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। আগে যেখানে বিপজ্জনক পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হতো, এখন সেখানে সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন ট্রেন চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
কাশ্মীরের পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবহন খাতের জন্য এই সংযোগ একটি মাইলফলক বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।