প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমাদের পরিকল্পনায় যদি আমরা মাতারবাড়ী, কক্সবাজার ও মহেশখালী সবকিছু মিলিয়ে একযোগে বন্দর উন্নত করতে পারি, তাহলে পুরো এলাকা নতুন সিঙ্গাপুরে পরিণত হবে।”
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি জানান, একসঙ্গে বন্দর উন্নয়ন ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংযোগ বাড়ানো গেলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, “আজ ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা যেরকম সনদ করলাম, তেমনি রাজনীতির ও নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য দরকার। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, উৎসবমুখর ও স্মরণীয় হয়, তবে তা দেশের রাজনীতিকে নতুন মাত্রা দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আজ যে সুর তুলেছি, সেটাই ঐক্যের সুর। এই ঐক্যের সুর নিয়েই আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন যেন জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হয়।”
ড. ইউনূস বলেন, “এই সনদের মাধ্যমে আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতার পথে এলাম। আগে আইন-কানুন ছিল না, এখন আমরা নিয়মতান্ত্রিক পথে চলতে প্রস্তুত। এই সনদ তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটাবে এবং নতুন এক সভ্যতার সূচনা করবে।”
তিনি বঙ্গোপসাগরকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আমরা কখনো ভেবে দেখিনি বঙ্গোপসাগর আমাদের কত বড় সম্পদ। এখানে এমন সম্ভাবনা আছে যা পুরো দেশকে অর্থনৈতিকভাবে রূপান্তরিত করতে পারে।”
বন্দর উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যদি সমুদ্রবন্দরগুলোকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে সারা বিশ্বের জাহাজ এখানে ভিড়বে। আমাদের পণ্য অন্য দেশের বন্দরে খালাস করার দরকার হবে না। বরং অন্য দেশগুলো তাদের পণ্য এখান থেকে নিতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই উন্নয়ন বাস্তবায়িত হলে আমরা কেবল জাতীয় নয়, আঞ্চলিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারব। নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল— সবাই এই যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করবে। আমরাও সমৃদ্ধ হবো, তারাও সমৃদ্ধ হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা যদি পরিকল্পনামাফিক এগোই, তাহলে মাতারবাড়ী, কক্সবাজার ও মহেশখালী মিলে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘নতুন সিঙ্গাপুরে’ পরিণত করবে।”