পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবদারু তলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জলপাই হাটে প্রতিদিন চলে ব্যাপক বেচাকেনা। সকাল থেকে জমে ওঠা এ হাটে পঞ্চগড়সহ আশপাশের পাঁচ জেলার চাষিরা ভ্যান, পিকআপ ও ট্রাক ভর্তি জলপাই নিয়ে আসেন। এরপর আড়তে স্তূপ করে রাখা হয় সবুজ জলপাই, শুরু হয় পাইকারি ক্রয়-বিক্রয়।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকার ও ব্যবসায়ীরা এখানে জলপাই কিনতে আসেন, এমনকি এখানকার জলপাই বিদেশেও রপ্তানি হয়। প্রতিবছর ভাদ্র মাস থেকে শুরু হয়ে প্রায় পাঁচ মাস চলে এই বেচাকেনা। চাষিরা জানান, ৩০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে জলপাই বিক্রি হয়, যা থেকে তারা বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করেন। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণ ফিরে আসে এবং স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থান হয়।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন এই হাটে প্রায় কোটি টাকার লেনদেন হয়। সরকারেরও এখানে থেকে বিপুল রাজস্ব আয় হয়। হাট কর্তৃপক্ষ জানায়, জলপাই হাটকে ঘিরে প্রায় দেড় হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাই হাটের উন্নয়নে সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ইজারাদার আসাদুজ্জামান সুমন বলেন, “দেবীগঞ্জ হাট জলপাইয়ের জন্য বিখ্যাত। পাশাপাশি বাতাবি লেবু ও পানসহ নানা পণ্যও বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় কোম্পানির প্রতিনিধিরাও জলপাই ও বাতাবি লেবু কিনতে আসেন।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ জানান, “এই জলপাই হাটের কারণেই এলাকায় জলপাই ও বাতাবি লেবু চাষ বেড়েছে। আমরা চাষিদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।”
দেবীগঞ্জের এই জলপাই হাট এখন কেবল বেচাকেনার স্থান নয়, বরং উত্তরাঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে।