প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে ঈদুল আযহার ছুটিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন পর্যটকরা প্রকৃতির লীলাভূমি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। সবুজে ঘেরা চা-বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বধ্যভূমি একাত্তর, বিটিআরআই, সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানাসহ নানা দর্শনীয় স্থানে ভিড় করছেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু।
জানা গেছে, প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলে ১০ থেকে ১৫ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটছে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসা দর্শনার্থীদের চোখেমুখে ছিল প্রাণচাঞ্চল্য ও উচ্ছ্বাস।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, “উত্তরার যানজট আর কোলাহল ছেড়ে শ্রীমঙ্গলের নির্মল বাতাসে এসে সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।”
রাজশাহী থেকে আসা রিয়াজুল ইসলাম জানান, “পরিবারসহ এই মনোরম প্রকৃতির মাঝে কাটানো সময়টি অসাধারণ। চা-বাগান, পানবাগান ও খাসিয়া পুঞ্জি আমাদের মুগ্ধ করেছে।”
সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে আগত ফেরদৌসি রহমান বলেন, “শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিবারের জন্য দারুণ উপযোগী।”
গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মো. সেলিম আহমেদ জানান, “শ্রীমঙ্গলে প্রায় ৫ হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সব হোটেল ও রিসোর্টে শনিবার (১৪ জুন) পর্যন্ত শতভাগ বুকিং।”
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ-এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আরমান খান জানান, “আমাদের ১৩৫টি কক্ষে প্রায় ৪০০ পর্যটক থাকতে পারে। আগামী শনিবার পর্যন্ত শতভাগ বুকিং রয়েছে। তবে কোনো বিদেশি পর্যটক নেই।”
স্থানীয়রা জানান, “ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে পর্যটন শিল্পের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে, যা কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি মো. কামরুল হাসান চৌধুরী জানান, “ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
এছাড়া সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানায় ঈদের দিন সকাল-বিকেল উপচে পড়া ভিড় ছিল। অনেকে লাউয়াছড়া উদ্যানে ট্রেন লাইনের ওপর হেঁটে বনভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করেছেন।
ঈদুল আযহার ছুটিতে পর্যটকদের আগমন শ্রীমঙ্গলকে করে তুলেছে উৎসবমুখর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নিরাপত্তা এবং পর্যটন সুবিধার সমন্বয়ে শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশের অন্যতম প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।