ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার বাঁশপদুয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন এবং আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মিল্লাত হোসেন (২১) বাঁশপদুয়া এলাকার মো. ইউসুফের ছেলে এবং আহত মো. আফসার (৩২) একই এলাকার এয়ার আহমেদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় মিল্লাত ও আফসার মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে সীমান্ত পিলারের কাছাকাছি যান। এ সময় বিএসএফের গুলিতে তারা দু’জন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সেখান থেকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। পথেই মিল্লাতের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত আফসারকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নিহতের মামা মোহাম্মদ ডালিম বলেন, মিল্লাত ও আফসার রাতে মাছ ধরতে গিয়ে বিএসএফের গুলির শিকার হন। তবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভিন্ন দাবি করেছে। বিএসএফ জানায়, রাতে চোরাকারবারিরা মালামাল পাচারের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিল। তাদের সতর্ক করা হলে তারা বিএসএফের ওপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। তখন আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে ফেনী ৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশাররফ হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে বিজিবির টহল দল পৌঁছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, নিহতরা সীমান্ত পিলার অতিক্রম করে ভারতের ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন। কেন এবং কী পরিস্থিতিতে তারা সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন, তা নিয়ে বিজিবি তদন্ত করছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনার বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে এবং প্রতিবাদলিপি পাঠানো হবে। সীমান্তে কোনো অবস্থাতেই গুলি বিনিময় কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সীমান্তে এমন প্রাণঘাতী ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম উত্তেজনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। পুনরায় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় ও স্বচ্ছ তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।