দেশের কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার নতুন করে এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫০ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
সভায় জানানো হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার। প্রতি টনের দাম পড়বে ৩৮৫.৫০ ডলার। অন্যদিকে চীন থেকে আমদানি করা হবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার। এতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার ডলার, প্রতি টনের দাম ৭২৯.২৫ ডলার। পাশাপাশি সৌদি আরব থেকেও আরও ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আসবে, যার জন্য ব্যয় হবে ২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার এবং প্রতি টনের দাম পড়বে ৭১৫ ডলার।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্ববাজারে সারের দামে অস্থিরতা ও দেশের কৃষি মৌসুম সামনে রেখে এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী মনে করা হচ্ছে। ইউরিয়া ও ডিএপি সারের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় কমানো সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য। একইসঙ্গে বাজারে কৃত্রিম সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতেও এই পদক্ষেপ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া খোলা বাজারে দরপত্র আহ্বানের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এই আমদানি কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় সময় ও জটিলতা উভয়ই কমেছে। সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সার আমদানির মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
কৃষি অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে এই ধরনের পদক্ষেপ কৃষিখাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক। তবে প্রকৃত সুফল পেতে হলে সময়মতো সরবরাহ, সঠিক বিতরণ এবং দুর্নীতিমুক্ত কার্যক্রম পরিচালনার ওপর জোর দিতে হবে।
সরকার আশাবাদী, এই সিদ্ধান্তের ফলে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের মধ্যেই স্বস্তি আসবে। তবে মাঠপর্যায়ে নজরদারি এবং কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই এখন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।