গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সংবাদকর্মীরাও আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। টানা ২১ মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসনে ক্ষুধা, ক্লান্তি ও অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছেন গাজার সাংবাদিকরা, যারা প্রতিনিয়ত জীবন ঝুঁকিতে ফেলে তুলে আনছেন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সত্যচিত্র। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও প্রেস স্বাধীনতা সংস্থাগুলোর প্রতি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিকসহ অসংখ্য সংবাদকর্মী। তথাপি এখনো তারা থেমে যাননি। আল জাজিরার আরবি চ্যানেলের গাজা সংবাদদাতা আনাস আল-শরীফ বলেন, “আমি ২১ মাস ধরে এক মুহূর্তের জন্যও কভারেজ বন্ধ করিনি। আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি—আমি ক্ষুধায় ডুবে যাচ্ছি, ক্লান্তিতে কাঁপছি। গাজা মারা যাচ্ছে, আমরাও তার সঙ্গে মারা যাচ্ছি।”
এই বাস্তবতায় সংবাদকর্মীদের আর শুধু তথ্যদাতা হিসেবে দেখার মানসিকতা ভেঙে, তাদেরকে ‘নিজস্ব গল্পের সাক্ষী’ হিসেবে মূল্যায়নের দাবি উঠেছে। আল জাজিরার মহাপরিচালক মোস্তেফা সোয়াগ বলেন, “আমরা যদি এখনই কিছু না করি, তবে একদিন এমন সময় আসবে যখন আর কেউ সত্য বলার মতো থাকবে না।”
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের প্রতি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব—তাদের কণ্ঠস্বর জোরদার করা এবং জোরপূর্বক অনাহার ও লক্ষ্যবস্তু হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থাসমূহ, মানবাধিকার সংগঠন ও প্রেস সংস্থাগুলোর দায়িত্ব—গাজার সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
গাজা শুধু একটি যুদ্ধক্ষেত্র নয়—এটি সত্যের জন্য লড়াইয়ের প্রান্তভূমি। এই লড়াইয়ে সাংবাদিকরা একা নয়—বিশ্ব সাংবাদিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন এবং সচেতন মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে।