ইরান আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—তারা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখবে, এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনা করবে না। শনিবার (১ নভেম্বর) আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এসব কথা বলেন।
আরাঘচি বলেন, “আমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করব না। আমাদের প্রতিপক্ষরা বলপ্রয়োগে যা অর্জন করতে পারেনি, রাজনৈতিক চাপের মাধ্যমেও তা অর্জন করতে পারবে না।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তেহরান নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে কখনোই আপস করবে না। আরাঘচির ভাষায়, “কোনো যুক্তিসঙ্গত জাতি তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ত্যাগ করতে রাজি হবে না। ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আমাদের সার্বভৌম অধিকার।”
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু স্থাপনায় পারমাণবিক উপকরণ রয়ে গেছে, তবে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম নিরাপদ স্থানে সুরক্ষিত রয়েছে।
সাক্ষাৎকারে আরাঘচি ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমরা যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। জায়নবাদী শাসন আবারও যদি আক্রমণ করে, তাহলে এর ফল হবে ভয়াবহ। ভবিষ্যতের যুদ্ধে ইসরায়েল আরেকটি পরাজয়ের সম্মুখীন হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধ থেকে ইরান বহু বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বাস্তব যুদ্ধে পরীক্ষা করা হয়েছে।
চলতি বছরের ১৩ জুন রাতে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায়। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তেহরান পাল্টা প্রতিশোধ নেয়। নয় দিন ধরে চলা হামলা–পাল্টা হামলায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয় মধ্যপ্রাচ্যে।
২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ভারী বোমারু বিমান ব্যবহার করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে হামলা চালায়।
পরদিনই ইরান কাতারের আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, এতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি।
২৪ জুন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন, যার পর ইরান ও ইসরায়েল উভয় পক্ষ যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হয়।