গত শনিবার রাতে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষ্যমতে, এই হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। এখন প্রশ্ন, ইরান কীভাবে জবাব দেবে?
বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে একজন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক জানিয়েছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সামনে তার জীবনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়েছে। কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর বিশ্লেষক করিম সাদ্দাদপুর সিএনএন-কে বলেন, “খামেনি সম্ভবত একজন স্বৈরশাসক হিসেবে জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। তিনি এখন বাঙ্কারে অবস্থান করছেন, তার বয়স ৮৬ বছর এবং তার বহু শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ইরানের আকাশসীমা এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। এই যুদ্ধ থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় খামেনির কাছে নেই এবং তিনি জয়ী হতে পারবেন না।”
গত সপ্তাহে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে খামেনি স্পষ্ট করে বলেন, “ইরান কখনো আত্মসমর্পণ করবে না। আমেরিকার যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের কঠিন জবাব দেওয়া হবে।” অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে খামেনিকে হত্যা করার ইসরায়েলি পরিকল্পনার গুঞ্জন নাকচ করলেও, তিনি বলেন, “খামেনি একটি সহজ টার্গেট।”
রোববার ট্রাম্প আরও বলেন, “শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন শব্দটি রাজনৈতিকভাবে সঠিক না হলেও, যদি বর্তমান সরকার ইরানকে 'মহান' করতে না পারে, তবে পরিবর্তন কেন নয়?” সিএনএন জানিয়েছে, ইরানে হস্তক্ষেপ করে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করা হলে দেশটি বিভক্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে, যার ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলজুড়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের চলমান উত্তেজনা এখন এক ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা, রাজনৈতিক হুঁশিয়ারি এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব—সব মিলিয়ে এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্ববাসী এখন তাকিয়ে আছে ইরান কীভাবে এর জবাব দেয়।