ঝিনাইদহ জেলায় কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে জেলার ছয়টি উপজেলার হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে জেলার কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সদর, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, কালীগঞ্জ, হরিণাকুন্ডু ও শৈলকূপা উপজেলায় সবজি ক্ষেত, ধানের বীজতলা এবং সদ্য রোপণ করা আমন ধানের চারা সম্পূর্ণভাবে ডুবে গেছে।
বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের মতো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় অনেক এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এতে একদিকে যেমন জমির চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিন দিন বাড়ছে। অনেক কৃষক নতুন করে ধান রোপণ করতে না পারায় হতাশায় ভুগছেন।
সদর উপজেলার লাউদিয়া গ্রামের কৃষক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমার দুই বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। পানি কবে নামবে জানি না। পানি নামলেও নতুন করে চারা লাগাতে হবে, কিন্তু এখন চারা কোথায় পাব?”
কোটচাঁদপুরের কৃষক আশাদুল ইসলাম জানান, “টানা বৃষ্টিতে আমার এক বিঘা জমির ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে রোপণ করলেও ক্ষতির ঘাটতি মেটাতে সময় লাগবে।”
মহেশপুর উপজেলার কৃষক রমজান আলী বলেন, “আমারসহ অনেক কৃষকের জমি এখনো ডুবে আছে। এই বছর আমন ধান ঘরে তোলা যাবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্ঠি চন্দ্র রায় জানান, “কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের সহায়তায় বাঁধ অপসারণসহ পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। কিছু এলাকায় ইতিমধ্যে সমস্যার সমাধান হয়েছে, বাকিগুলোতেও দ্রুত কাজ চলছে।”
কৃষি বিভাগের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ঝিনাইদহ জেলার ছয়টি উপজেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আমন ধানের জমি ও সবজি ক্ষেত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলার কৃষকরা দ্রুত পানি নিষ্কাশন ও সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা আবারও চাষাবাদ শুরু করে ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারেন।