ঝিনাইদহে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দুই কিশোর হাফেজ। মাত্র ১০ ও ১৬ মাসের মধ্যেই পবিত্র কোরআন সম্পূর্ণ মুখস্থ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে তারা। এই অসাধারণ কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে—দু’জনকেই ওমরাহ হজে পাঠানো হবে।
মেধাবী শিক্ষার্থীরা হলেন—মিয়া মোহাম্মদ মোস্তফা (১১) এবং তানভীর মাহমুদ ইফাদ (১১)। দু’জনই ঝিনাইদহের বিখ্যাত আল-কলম হিফয মাদ্রাসার ছাত্র।
মিয়া মোহাম্মদ মোস্তফা ২০২৪ সালের মে মাসে হিফজ শুরু করেন। অসুস্থতার কারণে চার মাসের বিরতি থাকা সত্ত্বেও তিনি মাত্র ১০ মাস ১৮ দিনে পুরো কোরআন মুখস্থ সম্পন্ন করেন। তাঁর বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের উপশহর পাড়ায়। পিতা মিয়া মোহাম্মদ হাসান জাকির একজন ব্যবসায়ী।
অন্যদিকে, তানভীর মাহমুদ ইফাদ ১৬ মাসে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করে সমানভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লক্ষীকোল গ্রামের পিতা কে. এম. তিতুর ছেলে।
এই অসাধারণ অর্জন উদযাপন করতে মঙ্গলবার সকালে আল-কলম হিফয মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয় সনদ ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক রেজাউল করিম, আল-কলম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ মুহাম্মদ সাইদুর রহমানসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বক্তারা বলেন, “এত স্বল্প সময়ে কোরআন হিফজ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এই দুই শিক্ষার্থীর অধ্যবসায়, মনোযোগ ও নিয়মানুবর্তিতা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”
আল-কলম হিফয মাদ্রাসার পরিচালক শায়খ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, “তাদের এই অনন্য সাফল্যের জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ওমরাহ হজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেন তারা আল্লাহর ঘরে গিয়ে শুকরিয়া আদায় করতে পারে।”
এই সাফল্যে শিক্ষার্থীদের পরিবার, সহপাঠী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের জোয়ার নেমে এসেছে। অনেকেই বলছেন, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি এমনভাবে কোরআন অধ্যয়নে মনোনিবেশ করে, তবে এটি সমাজে নৈতিকতা ও ধর্মীয় চেতনা জাগিয়ে তুলবে।