উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি সুইডেনে নোবেল ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অ্যাসাঞ্জ অভিযোগ করেন, চলতি বছর মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা সুইডিশ আইনের অধীনে তহবিলের ‘মোটামুটি অপব্যবহার’ এবং **‘যুদ্ধাপরাধে সহায়তা’**র শামিল। তার দাবি, এই সিদ্ধান্ত নোবেল শান্তি পুরস্কারের মূল আদর্শের পরিপন্থী।
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, একনায়কতন্ত্র থেকে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সংগ্রাম এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় ভূমিকার জন্য মারিয়া করিনা মাচাদোকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেন, মাচাদোর বিজয় ১৮৯৫ সালে আলফ্রেড নোবেলের উইলের স্পষ্ট লঙ্ঘন। নোবেলের উইলে উল্লেখ ছিল, শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে সেই ব্যক্তিকে—
“যিনি জাতিগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি, স্থায়ী সেনাবাহিনী হ্রাস বা বিলুপ্তি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বাধিক অবদান রেখেছেন।”
অ্যাসাঞ্জের মতে, বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় মাচাদোর ভূমিকা শান্তি প্রতিষ্ঠার চেয়ে সংঘাত উসকে দেওয়ার সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত।
অ্যাসাঞ্জ অভিযোগে উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক বিরোধের ফলে লাতিন আমেরিকার জলসীমায় মার্কিন নৌ ও বিমান বাহিনীর ব্যাপক মোতায়েন দেখা গেছে। ক্যারিবিয়ান সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারের অভিযোগে পরিচালিত অভিযানে কয়েক ডজন নৌকায় বোমা হামলা চালানো হয়েছে, যাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন।
অ্যাসাঞ্জ মাচাদোকে দেওয়া শান্তি পুরস্কারের ১ কোটি ১০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ১.১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) অর্থ জব্দ করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নোবেল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, তারা ‘শান্তির হাতিয়ারকে যুদ্ধের হাতিয়ারে’ পরিণত করেছেন।
সুইডিশ পুলিশ এএফপিকে নিশ্চিত করেছে যে, তারা অভিযোগটি গ্রহণ করেছে এবং বিষয়টি সুইডিশ অর্থনৈতিক অপরাধ কর্তৃপক্ষের কাছেও পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে নোবেল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।